বড় বিজয়ের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, আন্দোলন প্রসঙ্গে ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে এক ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ৬ এপ্রিলছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

বিএনপির আন্দোলন নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শর্টকাট পদ্ধতিতে কোনো দিন কিছু হয়নি। প্রতিটি বড় বিজয়ের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। এ আন্দোলন জাতিকে রক্ষার আন্দোলন।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে আয়োজিত এক ইফতার অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁদের আন্দোলন ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দেন। খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা এবং সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিহত, নিখোঁজ ও নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের পরিবারের সম্মানে এই ইফতারের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা বিএনপি।

ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অনেক নেতা-কর্মীর গুম হওয়ার ১২-১৩ বছর হয়ে যাচ্ছে, তাদের খবর জানি না। অনেক নেতা-কর্মীকে নির্যাতন করে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। বিএনপির ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবরের পরের দুই দিনে ৩৭ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

সরকারবিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এ আন্দোলন কেবল বিএনপির একার নয়, এটি জাতিকে রক্ষার আন্দোলন। যারা জোর করে ক্ষমতায় আছে, সেই দখলদার সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন।

সম্প্রতি নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে ঘুরে আসার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেকে দুঃখ-কষ্টে জীবন যাপন করলেও তাদের মুখে হতাশার ছাপ দেখিনি। এত নির্যাতনের পরও তারা দৃঢ় আছে। তারা আমাদের বলেছে, সঠিক নির্দেশনা দেন, সঠিক কর্মসূচি দেন, সামনের দিকে এগিয়ে আগের মতো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারব।’

ঢাকা মহানগরের নেতাদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ঢাকা মহানগর হচ্ছে কেন্দ্রবিন্দু। সব আন্দোলনে মূল লক্ষ্য ঢাকা। ঢাকাকে সেভাবে গড়ে তোলেন। ঢাকা যেন দুর্গে পরিণত হয়।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজনীতিবিদদের জন্য জেলখানা সেকেন্ড হোম। এতে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু গুম করা জঘন্য কাজ। যিনি গুম হয়েছেন, তিনি জীবিত নাকি মৃত, তাঁর পরিবারের সদস্যরা তা-ও জানেন না। তাঁদের স্বজনেরা হয়রানির শিকার হন।

ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব রফিকুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম, ‘গুম হওয়া’ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহমিনা রুশদি, সাজেদুল সুমনের ছোট বোন সানজিদা ইসলাম, চৌধুরী আলমের ছোট ছেলে আবু সাদাত চৌধুরী প্রমুখ।

নিখোঁজ ও নিহত হওয়া নেতা-কর্মীদের স্বজনদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে ঈদ শুভেচ্ছা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দেন তারেক রহমান।

ইফতার অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, জয়নাল আবেদীন, দলের যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুজিবুর রহমান সারোয়ার, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।