বিএনপির ডাকা হরতালে সমর্থন গণতন্ত্র মঞ্চের

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ আয়োজিত গণসমাবেশে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না
ছবি: আশরাফুল আলম

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, সরকার গণজোয়ারে ভীত হয়ে পড়েছে। পুলিশের সহায়তায় আওয়ামী লীগের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। তবে হামলা করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চলমান আন্দোলন দমন করা যাবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে বিএনপির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁরা কাল রোববার সারা দেশে হরতালের ডাক দিয়েছেন।

আজ শনিবার বিকেল চারটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সরকারের পদত্যাগ ও সংবিধান সংস্কার করে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে গণতন্ত্র মঞ্চের গণসমাবেশ থেকে এই হরতালের ডাক দেওয়া হয়। গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম।

সমমনা ছয়টি রাজনৈতিক সংগঠনের জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’–এর এই গণসমাবেশে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আজ থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হলো। দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই–সংগ্রাম চলবে। নতুন নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ সামনে এগিয়ে যাবে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আজ যেভাবে বিরোধী দলের ডাকে লাখ লাখ মানুষ পথে নেমে এসেছে, তাতে সরকারের বুকে কাঁপন ধরেছে। তারা রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে মোকাবিলা করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। জোরজবরদস্তি করে ক্ষমতায় টিকে থাকার কৌশল নিয়েছে। তাদের কাছ থেকে গণতন্ত্রকে মুক্ত করা ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা এখন এক নতুন মুক্তিযুদ্ধ। ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই যুদ্ধে জয়লাভ করতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চেয়েছি। আগাম অনুমোদন নিয়েছি। আমাদের আশঙ্কা ছিল পুলিশের সহায়তা নিয়ে ক্ষমতাসীনেরা বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা করবে। আর বিরোধী দলগুলোর ওপরেই এই হামলার দায় চাপাবে। সেই আশঙ্কা সত্যি হয়েছে। এই হামলার নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সহসভাপতি তানিয়া রব বলেন, জনগণ আজ ক্ষমতাসীনদের পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে। তারা আর এই সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, সরকার তাদের কর্তৃত্ববাদী শাসন আরও দীর্ঘায়িত করতে চায়। এ জন্যই আজ তারা লগি-বইঠার নামে লাঠিসোঁটা নিয়ে পথে নেমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর হামলা করেছে। রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করেছে। কিন্তু নির্যাতন–নিপীড়ন করে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি, তারাও পারবে না।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে শেখ রফিকুল ইসলাম বিএনপি ঘোষিত হরতালের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকেও রোববার সারা দেশে হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সমাবেশ শেষে গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।