চলতি মাসের মধ্যেই জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে: গাজী আতাউর

‘জুলাই শহীদ ও আহতদের সম্মাননা এবং সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমানছবি: ইসলামী আন্দোলনের সৌজন্যে

অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই যোদ্ধাদের ভুলে গিয়ে নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের গলায় ফাঁসির দড়ি রেখে নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়া কোনোভাবেই উচিত হবে না।

ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র বলেন, চলতি মাসের মধ্যেই জুলাই শহীদ ও আহতদের সনদ এবং জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে। এই সনদে মাদ্রাসাছাত্রদের স্বীকৃতিও দিতে হবে।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে গাজী আতাউর রহমান এসব কথা বলেন। ‘জুলাই শহীদ ও আহতদের সম্মাননা এবং সংবর্ধনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।

বিএনপির সমালোচনার জবাবে ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলনকে বিতর্কিত করার জন্য আপনারা বক্তব্য দিচ্ছেন। কারা ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের দোসর ছিল জনগণ তা জানে। আপনারা ফ্যাসিবাদের দোসর বলেই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ছিলেন না। আন্দোলনে নেই বলে ঘোষণা দিয়েছেন।’

বিএনপিকে উদ্দেশ করে গাজী আতাউর রহমান আরও বলেন, ‘আপনারা ১৬ বছর ফ্যাসিবাদ দ্বারা নির্যাতন হয়েছেন ঠিক, কিন্তু জনগণের আস্থা আপনাদের ওপর নেই বলে জনগণ আপনাদের আন্দোলনে সাড়া দেয়নি। ছাত্রদের ওপর জনতার আস্থা ও বিশ্বাস ছিল বলেই জনগণ ছাত্রদের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে।’

এর আগে শনিবার সকালে এক অনুষ্ঠানে একজন ব্যবসায়ী থেকে পাওয়া তথ্য তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আগে ঘুষ দিতে হতো ১ লাখ টাকা, এখন দিতে হয় ৫ লাখ টাকা।’

এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘জুলাই যুদ্ধের এক বছর পার হতে না হতেই ঘুষ–বাণিজ্য বেড়ে যাওয়া আশঙ্কাজনক। রাষ্ট্রের কোনো একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আপনারা শুদ্ধতা ফিরিয়ে আনতে পারলেন না। তাহলে কি জুলাই আন্দোলন ব্যর্থ হবে? আমরা এ আন্দোলন-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হতে দেব না।’

ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সহসভাপতি আলতাফ হোসাইন, এম এইচ মোস্তফা, সেক্রেটারি আবদুল আউয়াল, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম শরীয়াতুল্লাহ, মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

আহত জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে স্মৃতিচারণে অংশ নেন মুহাম্মদ জাহিদ হোসাইন, মাওলানা আবু মাহমুদ পাটওয়ারী, খন্দকার লিয়াকত আলী, মুহাম্মদ রনজু মিয়া, আনোয়ারুল ইসলাম, আল-আমিন, হাবীব ভূইয়া, মুহাম্মদ বাবুল হোসেন, মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, সেলিম সিকদার, মুহাম্মদ জিহাদ প্রমুখ।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শহীদ সাজিদুর রহমানের বাবা শাহজাহান ভূইয়া, শহীদ রেজাউল করীমের বাবা আল-আমিন এবং শহীদ জিহাদের বড় ভাই মুহাম্মদ রিয়াদ হোসেন। আলোচনা শেষে আহত এবং শহীদ যোদ্ধাদের পরিবারের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।