নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে কাল খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ

ঢাকায় খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির নির্বাহী পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়ছবি: খেলাফত মজলিসের সৌজন্যে

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনকে ‘ইসলামবিদ্বেষী’ উল্লেখ করে এই কমিশনের প্রতিবেদনকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে খেলাফত মজলিস। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও তাদের প্রতিবেদন বাতিল এবং ভারতে মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে ২৫ এপ্রিল সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দলটি। আগামীকাল শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর ফটকে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করবে খেলাফত মজলিস।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ঢাকায় খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে এ কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়। পরে আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মসূচির কথা জানানো হয়েছে। খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী সভায় সভাপতিত্ব করেন। দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের সভা সঞ্চালনায় ছিলেন। বৈঠকে দলের যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল ও আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, কাজী মিনহাজুল আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন।

খেলাফত মজলিসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে নেতারা নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রদত্ত প্রতিবেদন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে অবিলম্বে কমিশন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। বৈঠকে দলের নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, কমিশনের প্রতিবেদনে মুসলিম উত্তরাধিকার আইন বাতিলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মুসলিম পারিবারিক আইন সংস্কার করে সব ধর্মের জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যেখানে বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে নারী-পুরুষের কথিত সমান অধিকার থাকবে। স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করতে পারবেন। যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রস্তাব অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নির্দিষ্ট মতাদর্শের রুচির বহিঃপ্রকাশমাত্র। বেশ কিছু প্রস্তাব পবিত্র কুরআনের বিধানের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশের মুসলিম নারী সমাজের বাস্তবতা ও স্বকীয়তার সঙ্গেও এর কোনো সম্পর্ক নেই, যা ইসলাম ও মুসলিম পরিচয়ের অস্তিত্বের ওপর একটি সুপরিকল্পিত আঘাত। এসব প্রস্তাব দেশের ধর্মীয় ভারসাম্য ও পারিবারিক কাঠামো ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এই কমিশনের সদস্যরা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চান। তাঁরা নারীদের সর্বসাধারণের আদৌ প্রতিনিধিত্ব করেন না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানাই। তাদের সব বিতর্কিত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের দাবি জানাই।’