জাতীয় নির্বাচনে সত্যকে মিথ্যা বানানোর চেষ্টা হবে: আইনমন্ত্রী
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেক নাটক সাজানো হবে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য বানানোর অনেক চেষ্টা হবে। গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের পেছনে ষড়যন্ত্র ছিল বলেও মনে করেন আইনমন্ত্রী।
আজ সোমবার সচিবালয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ সাক্ষাৎ করতে এলে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের কথা উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ওই সমাবেশ ঘিরে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র ছিল। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হবে। অনেক নাটক সাজানো হবে। সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য বানানোর অনেক চেষ্টা হবে।
মন্ত্রী বলেন, এমন ঘটনা বানানোর চেষ্টা করা হলে মানবাধিকার কমিশনকে তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটন করতে হবে। একই সঙ্গে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করতে হবে। তিনি বলেন, মানুষে মানুষে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, সেখানেও মানবাধিকার কমিশনকে কাজ করতে হবে। যেকোনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনুসন্ধানের তথ্য পাওয়ামাত্রই সরকারকে জানাতে কমিশনকে পরামর্শ দেন আইনমন্ত্রী।
মন্ত্রী আরও বলেন, মানবাধিকার রক্ষায় বর্তমান সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। মানবাধিকার রক্ষায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে সরকার প্রস্তুত। শুধু কমিশন নয়, যিনিই মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করবেন, সরকার তাঁকে সহায়তা করবে।
শিশু ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় গুরুত্বারোপ করে আইনমন্ত্রী বলেন, দেশের ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ মানুষ যেখানে বসবাস করে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এখনো সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। এসব জায়গায়ও কমিশনকে কাজ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ জনপদ ও তৃণমূল পর্যায়ের অধিকাংশ মানুষ এখনো তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন নন। মানবাধিকার বিষয়ে তাঁদের সচেতন করতে হবে। কমিশনকে সফল হতে হলে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। এ জন্য উপজেলা পর্যায়ে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, শিশুদের রচনা প্রতিযোগিতাসহ অন্যান্য প্রচার কার্যক্রম বাড়ানোর পরামর্শ দেন আইনমন্ত্রী।
বৈঠকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ কমিশনের বিভিন্ন কার্যক্রমের বিবরণ তুলে ধরেন। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা আইনমন্ত্রীকে জানান। সেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারের সহযোগিতা চান। এ সময় তিনি কমিশনের স্থায়ী ভবন নির্মাণ, অবৈতনিক সদস্যদের মর্যাদা নির্ধারণ, সরাসরি কমিশনের অনুকূলে বাজেট বরাদ্দ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সাক্ষাৎকালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য সেলিম রেজা, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মইনুল কবির, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব গোলাম সারওয়ার, কমিশনের অবৈতনিক সদস্য আমিনুল ইসলাম, কংজরী চৌধুরী, তানিয়া হক, কাওসার আহমেদ, কমিশনের সচিব নারায়ণ চন্দ্র সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।