নির্বাচন দিতে যত দেরি করবেন, তত দুর্বল হবেন: বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন আহমদ
অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন দিতে যত দেরি করবে, তত দুর্বল হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ। সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, ‘আপনারাও কেউ সীমা লঙ্ঘন করবেন না। জন–আকাঙ্ক্ষা অনুধাবন করার চেষ্টা করুন।’
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ লেবার পার্টির আয়োজনে ‘গণ–অভ্যুত্থানের জন–আকাঙ্ক্ষা: রাষ্ট্র মেরামত প্রস্তাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় হাফিজ উদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন।
আলোচনায় বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘(নির্বাচন দিতে) যত দেরি করবেন আপনারা, তত দুর্বল হবেন। যত দেরি করবেন, পতিত সরকার আরও শক্তিশালী হবে। চট করে চলে আসার চিন্তাভাবনা তাদের মধ্যে আবার শুরু হয়ে গেছে। সুতরাং কত সময়ের মধ্যে আপনারা নির্বাচন দেবেন, পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করুন এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার চিন্তাভাবনা আত্মস্থ করুন।’
সংবিধানের নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সংস্কারে প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা অবশ্যই চাই, সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংযোজন হোক। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন প্রতিটি নির্বাচন হবে—সব দলই বলেছে। এ ছাড়া এ ধরনের প্রাসঙ্গিক যেসব সংস্কার আছে বিদ্যমান সংবিধানে, সেটি সংস্কার করলেই পারে। কিন্তু নতুন করে সংবিধান লেখা মানেই তাদের আরও ১০ বছর সময় দেওয়া। এভাবে আমরা সময় দিতে রাজি নই।’
দেশের সংস্কার করবে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা—এমন মন্তব্য করে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সেই সংস্কারের অপেক্ষায় আছি। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কারও কারও কথায় মনে হয়েছে, তাঁরা বিরাট একটা ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছেন, তাঁরা সব সংস্কার করে দেবেন। কিন্তু তাঁদের কোনো ম্যান্ডেট নেই সংস্কারের। তাঁদের প্রধান কাজ একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, ‘সীমানার মধ্যে থাকেন। আওয়ামী লীগ কীভাবে বিদায় হয়েছে? সীমা লঙ্ঘন করেছে বলে হয়েছে। সুতরাং আপনারাও কেউ সীমা লঙ্ঘন করবেন না। জন–আকাঙ্ক্ষা অনুধাবন করার চেষ্টা করুন।’
শিক্ষাঙ্গনে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের বিরোধিতা করে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতির অংশীজন হলো ছাত্ররা। তাদের মনোভাবটা বোঝার চেষ্টা করুন। যারা শেখ হাসিনার মতো সরকারকে অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছে, তাদের ওপর আস্থা রাখুন।’
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় আরও অংশ নেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুকোমল বড়ুয়া, গণফোরামের মহাসচিব সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যালবার্ট পি কস্তাসহ আরও অনেকে।