এই ‘রেজিমকে’ বিতাড়িত করতে হলে রাস্তায় থাকতে হবে: আমীর খসরু
এই ‘রেজিমকে’ (শাসন) বিতাড়িত করতে হলে রাস্তায় থাকতে হবে—এ মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেছেন, এই রেজিমকে পাল্টাতে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে থাকতে হবে। এটা কিন্তু কোনো দলের সংগ্রাম নয়; এটা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির সংগ্রাম।
আজ রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার, কাঠামোগত সংস্কার এবং প্রধান অংশীজনদের ভূমিকা শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট নামের একটা রাজনৈতিক দল।
সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নেওয়ার পর যে রাজনীতি আসবে, সেটা হবে ভিন্ন রাজনীতি। সত্যিকারার্থে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা, গণমাধ্যম ও বাক্স্বাধীনতা—সব মূল্যবোধের ভিত্তিতে একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা হবে। এতে অংশীজন থাকবে অংশগ্রহণ করার জন্য। সেই ধরনের একটা বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের পতন চাওয়া হচ্ছে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ফ্যাসিস্ট সরকারের একটা টুলস (হাতিয়ার)। তাদের কাজই হচ্ছে আগামী নির্বাচনে কীভাবে চুরি করে শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় বসানো যায়, এই কাজ করা। এটাই তার কাজ। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এই সরকার যাদের বসিয়েছে, তারাই এই ফ্যাসিস্ট রেজিমকে সহযোগিতা করছে। এদের কাছে প্রত্যাশা করে লাভ নেই। একটাই কাজ এই রেজিমকে সরাতে হবে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আনা হয়েছিল। সংবিধানে সন্নিবেশিত হয়েছিল। এটাকে যেতে হলে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেতে হবে। আর দ্বিতীয়ত, কেউ যদি বাতিল করতে চায়, তাহলে তাকে নির্বাচনী ইশতেহারে বলতে হবে, আমি আসলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করব। আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে বলতে পারত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করা আদালতের কাজ নয়। তাদের বলা উচিত ছিল জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এর সমাধান হওয়ার দরকার।’
তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আদালত বলছেন, অমুকের বক্তব্য প্রচার করা যাবে না। এটা তো তাঁর (আদালতের) কাজ না। তাঁর (আদালতের) উচিত ছিল এটা বলা যে তোমরা দিনের ভোট রাতে করেছ, এটা নিয়ে তদন্ত হবে।’
গুম, খুন, হত্যা, মিথ্যা মামলা সবকিছু অব্যাহত থাকবে—‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের নিয়মই এটা, এমন মন্তব্য করেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, এই রেজিমকে বিতাড়িত করতে হলে রাস্তায় থাকতে হবে, ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতে হবে। ভবিষ্যতে জনগণের ভোটে যে সরকার গঠিত হবে, সেটা হবে জাতীয় সরকার। কারণ, কোনো একটা দল এককভাবে বাংলাদেশের বর্তমান সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। এর জন্য জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন। সবাই মিলে দেশটাকে সঠিক জায়গায় নিয়ে আসতে হবে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি) সদস্যসচিব মজিবুর রহমান। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ওয়ারেসুল কারীম।