গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে

‘গণভোট না অর্ডিন্যান্স: প্রসঙ্গ জুলাই সনদ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারাছবি: আয়োজক সংগঠনের সৌজন্যে

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিকল্প নেই। অধ্যাদেশের মাধ্যমে সনদ কার্যকর হলে পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত সরকার তা সহজেই বাতিল করতে পারে। তাই গণভোটের মাধ্যমেই জুলাই সনদকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। জুলাই সনদের স্বীকৃতি না এলে দেশ গভীর রাজনৈতিক সংকটে পড়বে।

আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন বক্তারা। ‘গণভোট না অর্ডিন্যান্স: প্রসঙ্গ জুলাই সনদ’ শীর্ষক এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে সেন্টার ফর সিভিল রাইটস নামের একটি প্ল্যাটফর্ম।

আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবদুর রহমান বলেন, এত প্রাণহানির পরেও জুলাই আন্দোলনকে বিপ্লবে পরিণত করতে না পারা হতাশার। তিনি জুলাই সনদকে সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।

গোলটেবিলের মূল আলোচক ছিলেন সেন্টার ফর সিভিল রাইটসের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে দেশের মানুষ ক্রমাগত প্রতারিত হচ্ছে। যে দলই ক্ষমতায় গেছে, তারা দলীয় স্বার্থ ছাড়া সাধারণ মানুষের জন্য তেমন কিছুই করেনি। তাই জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি মজবুত না হলে দেশের মানুষ পুনরায় প্রতারিত হতে পারে।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা জরুরি বলে মনে করেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, ‘সবার প্রচেষ্টা থাকলেই সনদ বাস্তবায়নের পথ উন্মুক্ত হবে।’

এক বছর পরেও জুলাই শহীদদের অধিকার আদায় হয়নি বলে মন্তব্য করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহিল আমান আযমী। তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে যারাই ক্ষমতায় আসুক, জুলাই সনদকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করবে না। এমন বাস্তবতায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের একমাত্র পথ হলো গণভোট।

গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তাঁর একটি ভাষণে বলেছেন মানুষ গণভোট বোঝে না। তাঁর বক্তব্য থেকে এটা পরিষ্কার যে তিনি গণভোটের আয়োজন করতে রাজি নন। তবে আমরা দাবি তুলতে পারি। এর গুরুত্ব তুলে ধরতে পারি।’

জুলাই সনদ প্রণয়নের আগে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে সরকারের কথা বলা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী। তিনি বলেন, সরকার জুলাই শহীদ ও আহতদের সঙ্গে আলোচনা না করে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে চা-শিঙ্গাড়া খেতে খেতে জুলাই সনদ ঠিক করলেন।

অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য কোনো কাজ করেনি—এমন অভিযোগ করেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, যদিও এই অভ্যুত্থানের মূলে ছিল ক্যাম্পাসভিত্তিক আন্দোলন।

আলোচনায় আরও অংশ দেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান, এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসরিন সুলতানা, আইনজীবী সাজ্জাদ আলী, ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।