মুঠোফোনে আড়িপাতা বেআইনি: সংসদে জি এম কাদের

জি এম কাদের
ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, রাজনীতিবিদদের মুঠোফোনে আড়িপাতা হচ্ছে—এমন অভিযোগ করে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া বিশেষ ব্যক্তিদের টার্গেট করে তাঁদের ফোনে আড়িপাতা অনৈতিক ও বেআইনি। এটি সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে জি এম কাদের এসব কথা বলেন।

দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর তুলে ধরে জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে যেটা শুনতে পাচ্ছি, একটি গোয়েন্দা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে আমাদের দেশে, ব্যাপকভাবে। সেটা আমরা বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পারছি...সংবাদপত্র থেকে। সেটা হলো সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, রাজনীতিবিদ, আইনজীবীর স্মার্টফোনে আড়িপাতা হচ্ছে। আর এতে ব্যবহৃত হচ্ছে ইসরায়েলি কোম্পানি এনএসও গ্রুপের তৈরি করা স্পাইওয়্যার পেগাসাস।’

জি এম কাদের বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতিরেকে বিশেষ ব্যক্তিদের টার্গেট করে তাঁদের ফোনে আড়িপাতা অনৈতিক ও বেআইনি। এগুলো ব্যবহৃত হয় সন্ত্রাসী ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে যাঁরা জড়িত, তাঁদের জন্য।’

জি এম কাদের বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিশেষ করে যাঁরা সরকারবিরোধী রাজনীতি করেন, তাঁদের মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদি অনুমোদন ছাড়া রেকর্ড করা হয় বলে শোনা যায়। এসব কাজের যুক্তি ও উদ্দেশ্য কী হতে পারে, প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘যুক্তি হতে পারে, সরকার তাঁদের সমালোচনাকে রাষ্ট্রদ্রোহ বলে মনে করে। তাহলে কি সরকার আর রাষ্ট্র একীভূত হয়ে গেছে?’

জি এম কাদের বলেন, আরেকটি উদ্দেশ্য হতে পারে, সব রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানি করতে চায় সরকার, তার সুযোগ সৃষ্টি করা। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর এ ধরনের আড়িপাতা, নজরদারি করে হয়রানি করা বিরোধীদের কথা বলা বা স্বাধীন মতপ্রকাশে বাধা সৃষ্টি করা। কথা বলা ও মতপ্রকাশের অধিকার সবার জন্মগত অধিকার।

সড়কে দুর্ঘটনার চিত্র তুলে ধরে জি এম কাদের বলেন, অনেক প্রকল্প হচ্ছে, ব্যয় হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বছরের পর বছর প্রকল্প শেষ হচ্ছে না। প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে। আর সড়কে যানজট, দুর্ঘটনা ও মৃত্যু বাড়ছে। তিনি বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকৃত উন্নয়ন নয়, এটি উন্নয়নের সহায়কমাত্র। সুশাসন ও শৃঙ্খলা না থাকলে সাধারণ মানুষ উন্নয়নের স্বাদ পায় না।

কয়েক বছরের সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র তুলে ধরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর একটি আইন করা হয়। এরপর ২০১৯-২০ সালে দুর্ঘটনা তুলনামূলক কিছুটা কমেছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আইনটি আর বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে আবার আগের মতো দুর্ঘটনা বাড়ছে। সংসদে জাতীয় স্বার্থে যে আইন পাস করা হয়েছে, তা কেন বাস্তবায়িত হবে না? সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবির মুখে আইনটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। যাঁদের এই আইন প্রয়োগ করার কথা, তাঁরা মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোকে বেশি গ্রাহ্য করেন। এখানে দুর্নীতিও বড় ভূমিকা পালন করে।