চলমান আন্দোলনেই সরকারকে ‘ফেলে দেওয়ার’ আশা সেলিমা রহমানের

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানফাইল ছবি

চলমান আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে  ‘ফেলে দেওয়ার’ আশা করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন দাবি করেন।

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের রাজনীতি ও জিয়াউর রহমানের দর্শন’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

দেশে ৯৫ ভাগ লোক এখন বিএনপির পক্ষে বলে দাবি করেন সেলিমা রহমান। সভায় তিনি বলেন, ‘আমাদের লড়াই জনগণের ভোটের অধিকার, জনগণের কল্যাণ ও গণতন্ত্রের মুক্তি। কাজেই আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এই মুহূর্তে লড়াই করছি না। আশা করি, আমাদের চলমান আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে ফেলে দিতে পারব।’

নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বিশ্লেষণ ঠিক আছে বলে মনে করেন বিএনপির নেতা সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, টিআইবি যখন বিএনপির বিরুদ্ধে বলে, তাদের (আওয়ামী লীগ) কাছে সেটা ঠিক আছে। আজকে যখন টিআইবি নির্বাচনের বিশ্লেষণ দেখিয়েছে, সেটাকে তারা বলছে বিএনপির কথা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একপক্ষীয় ও পাতানো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলেছে, এবারের নির্বাচন অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। এ নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত।

টিআইবির এমন বিশ্লেষণের সমালোচনা করছেন সরকার দলের মন্ত্রী ও নেতা–কর্মীরা। টিআইবি বিএনপির ভাষায় কথা বলছেন বলে অভিযোগ করছেন তাঁরা।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখনো লড়াই করছেন উল্লেখ করে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমাদের দিকে তাকিয়ে উনি মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছেন। বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী ঘরে ফিরতে পারছেন না, তাঁদের দিকে তাকাতে হবে এবং সে জন্য আন্দোলন চলবে।’

দেশের রাজনীতি এখন রাজনীতিবিদদের ‘হাত থেকে চলে গেছে’ বলে মনে করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক তাজমেরী এস ইসলাম। তিনি বলেন, আজকের সরকার জনবিচ্ছিন্ন। আজ সংসদ সদস্যদের বেশির ভাগই ব্যবসায়ী। এই সরকার শুধু নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য রাজনীতিকে ধ্বংস করে দিল।

এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে এ কথা বলা যাবে না। কারণ, এই আন্দোলনের কারণে দেশের প্রায় ৯৫ ভাগ মানুষ ভোট দিতে যাননি। দেশের মানুষ রাজপথে আছেন। কাজেই আশাহত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

সরকার বিভিন্ন দেশের চিঠি খুঁজছে, তাদের কে কে অভিনন্দন পাঠায়—এমন মন্তব্য করে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আরে, অভিনন্দন লাগবে দেশের জনগণের।’

আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন বিএসপিপির সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরী। এ সময় আরও বক্তব্য দেন জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, কৃষিবিদ রাশেদুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোট মহাসচিব মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।