সিইসি কি ‘কালোটাকা’ নেওয়ার কথা বলতে পারেন, প্রশ্ন রিজভীর

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী
ফাইল ছবি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ভোটারদের কালোটাকা নেওয়ার কথা বলতে পারেন কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার গত পরশু দিন বলেছেন, কালোটাকা দিলে নিয়েন, কিন্তু স্বাধীনভাবে ভোট দিয়েন। একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান (সিইসি) এ কথা বলতে পারেন?’

‘কালোটাকা’ নেওয়ার কথাকে অনৈতিক আখ্যায়িত করে বিএনপি নেতা রিজভী বলেছেন, এই কথার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ করা উচিত।

সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে গত বুধবার গাজীপুরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সেখানে নির্বাচনে কালোটাকার প্রভাব রুখতে প্রার্থীদেরও ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান সিইসি। প্রার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি জনপ্রতিনিধি হন, তাহলে সত্যিকার অর্থে জনগণের ম্যান্ডেট আপনাদের থাকতে হবে। কালোটাকা নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবেন না। কালোটাকা যতই বিতরণ করা হোক। যদি মনে করেন কন্ট্রোল করতে পারছেন না, তাহলে কালোটাকা গ্রহণকারী ব্যক্তিদের বলে দেবেন, কালোটাকা নিলেও নিয়েন, ভোটটা কিন্তু স্বাধীনভাবে দিয়েন। আপনি যাঁকে বিশ্বাস করেন, যাঁকে ভালো মনে করেন, ভোটটা তাঁকেই দিয়েন।’

আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সিইসির এই বক্তব্য ধরে ওই সব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলমসহ কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধন হয়।

বক্তব্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যের মধ্যেই আছে বাকশাল।  আর বাকশাল মানেই সব দল বন্ধ। ওই ঐতিহ্য নিয়েই আওয়ামী লীগ গত ১৪ বছর জনগণকে কারাগারে ঢুকিয়েছে। গোটা দেশকে কারাবন্দী করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে।’

৪৭ বছর পর একটি মামলায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে হুকুমের আসামি করার সমালোচনা করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘যিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন, সেই শহীদ রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে একটি মামলা দেওয়া হয়েছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সেদিন কোর্টে হাজিরা দিতে গিয়ে সাইফুল আলমের সঙ্গে দেখা হলো। বলল, রিজভী ভাই আমাকে ২৪ ঘণ্টা লকআপে রাখা হয়।’ তিনি বলেন, ‘কেন সাইফুল আলমকে ২৪ ঘণ্টা লকআপে রাখা হয়? জেলখানাই তো একটা লকআপ। আবার জেলের মধ্যেই নিষ্ঠুর জেল। কি অপরাধ করেছে সে? সে তো ক্যাসিনো চালায়নি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেনি।’

কারা মহাপরিদর্শকের (আইজি প্রিজন) উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘কারাগারে অনেকের কাছে বাইরে থেকে অনেক কিছু যায়। যারা ডাকাত, প্রকৃত সন্ত্রাসী, তারা অনেক সুযোগ পায়। আর আমাদের বাসাবাড়ি থেকে যদি খাবার যায়, আপনি (আইজি প্রিজন) সেটাও ঢুকতে দেন না।’

জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী প্রমুখ।