জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করতে হবে: সিপিবি

মহান মে দিবস উপলক্ষে আজ রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে সমাবেশ করেন সিপিবির নেতা-কর্মীরা
ছবি: সিপিবির সৌজন্যে

দেশের সব শ্রমিকের নিয়োগপত্র নিশ্চিত করা, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ও শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা।
মহান মে দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার পুরানা পল্টন মোড়ে এক সমাবেশ থেকে সিপিবির নেতারা এ আহ্বান জানান।

সিপিবির নেতারা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রীয় মালিকানার নীতিতে দেশ পরিচালনার কথা থাকলেও সরকার উল্টো পথে চলছে। লুটেরা পুঁজিপতিরা বারবার রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় কলকারখানা বন্ধ করছে, বিরাষ্ট্রীয়করণের নামে অবাধ লুটপাট অব্যাহত রাখছে।

ব্যক্তিমালিকানার নামে অনেক ক্ষেত্রে শ্রমজীবী মানুষের ওপর শোষণের মাত্রা বাড়িয়ে লুটপাটের নতুন ধারা তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নেতারা। তাঁরা বলেন, শ্রমিকদের জীবনে চরম সংকট সৃষ্টি করে নব্য ধনিক গোষ্ঠীকে আরও ধনী করে শোষণ বৈষম্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

অধিকাংশ শ্রমিকের কাজের নিশ্চয়তা নেই মন্তব্য করে সমাবেশে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, শ্রমজীবী মানুষের ওপর শুধু শোষণ নয়, তার যতটুকু শ্রম অধিকার আছে, তা দিন দিন খর্ব করার চেষ্টা করছে সরকার। স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ও পরিপূর্ণ শ্রম অধিকার বাস্তবায়িত হয়নি। সব শ্রমিক এখনো নিয়োগপত্র পান না, বেঁচে থাকতে ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে বাধ্য হন।

সিপিবির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান বলেন, শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে এখনো শ্রম আইন প্রতিষ্ঠা করা হয়নি; বরং শ্রমিকের গণতান্ত্রিক অধিকার ধ্বংস করতে নতুন নতুন আইন করা হচ্ছে। দেশের শ্রম আইনে শ্রমিকদের যতটুকু অধিকার দেওয়া আছে, ততটুকুও প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দেওয়া হয় না।

মে দিবসের বিপ্লবী প্রেরণায় শ্রমজীবী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, শোষণমুক্তির সংগ্রাম এগিয়ে নিতে হবে। ‘চলমান দুঃশাসনের’ বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন আদায় করতে হবে।

জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবি জানান দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এন রাশেদা। বলেন, সব খাতে মানবিক জীবনযাপন উপযোগী ন্যূনতম মজুরি ও বোনাস দিতে হবে। রেশনিং, বাসস্থান ও শিক্ষা-স্বাস্থ্যের সুরক্ষা দিতে হবে। পেনশনব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, শ্রমিকনেতা মাহবুব আলম, ইদ্রিস আলী প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সমাবেশের আগে উদীচীর শিল্পীরা গণসংগীত পরিবেশন করেন।