সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী

বাঁশখালীতে ২০০৩ সালে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত সংখ্যালঘুদের মধ্যে আজ শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের চেক বিতরণ করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদছবি: সংগৃহীত

বিএনপি বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বলে অভিযোগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতাকে সমূলে বিনাশ করতে হলে, এই সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে যারা রাজনীতি করে, তাদের চিরতরে বর্জন করতে হবে।
আজ শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে ২০০৩ সালে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়। এ সময় সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যুবকল্যাণ তহবিলের অনুদানের চেকও বিতরণ করা হয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা জানেন, কারা সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজনীতি করে। যারা রাষ্ট্রটাই চায়নি। একাত্তর সালে যারা ফতোয়া দিয়েছিল, হিন্দুরা গণিমতের মাল, সেই জামায়াতে ইসলামী বিএনপির প্রধান সহযোগী। তাদের যে ২২ দলের রাজনৈতিক জোট, সেখানে বহু দল আছে, যাদের নেতারা আফগানিস্তানে গিয়েছিল। তারা স্লোগান দেয়, “আমরা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগান।”’

২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠনের পর সারা দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেই তাণ্ডবের পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশ থেকে পালিয়ে আসা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খুলতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়া থেকে শুরু করে বরিশালের বানারিপাড়া, মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হয়েছে।

আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার কারণে সে সময় সংখ্যালঘুদের ওপর ওই নির্যাতন চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। তিনি বলেন, বাঁশখালীতেও একই অপরাধে তৎকালীন সংসদ সদস্যের নিকটাত্মীয় বিএনপি নেতা আমিন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে অগ্নিকাণ্ড ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সেদিন সংসদ সদস্যের দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তিনি এই দায়িত্ব এড়াতে পারেন না।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০০৩ সালে তখনকার বিরোধীদলীয় নেতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাঁশখালীতে ন্যক্কারজনক এই ঘটনার পর ছুটে গিয়েছিলেন। আমি নিজেও তখন সাথে ছিলাম। সেই দৃশ্যের কথা এখনো আমার মনে আছে। তিনি তখন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আমি ক্ষমতায় গেলে আপনাদের জন্য যত দূর সম্ভব করব। তিনি সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছেন।’

রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে হলে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান এ দেশে থাকতে পারে না উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে সমূলে বিনাশ করতে হবে, তাহলে রাষ্ট্র এগিয়ে যাবে। সাম্প্রদায়িকতার কারণে পাকিস্তান রাষ্ট্র আজ এগোতে পারছে না।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।