২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

খাপড়া ওয়ার্ড দিবসকে ‘জাতীয় শহীদ দিবস’ ঘোষণার দাবি

ঐতিহাসিক ‘খাপড়া ওয়ার্ড দিবস’ উপলক্ষে আজ বুধবার রাজশাহী শহরের সাহেববাজার বড় মসজিদ মোড়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স)ছবি: সংগৃহীত

আজ ২৪ এপ্রিল ছিল ঐতিহাসিক ‘খাপড়া ওয়ার্ড দিবস’। দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা ২৪ এপ্রিলকে ‘জাতীয় শহীদ দিবস’ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।

১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলা কারাগারের খাপড়া ওয়ার্ডে রাজবন্দীদের ওপরে তৎকালীন পাকিস্তানের স্বৈরাচারী সরকারের পুলিশ নির্মমভাবে গুলি চালায়। গুলিতে সাতজন তরুণ রাজবন্দী নিহত হন। তাঁরা হলেন বিজন সেন, কম্পরাম সিংহ, হানিফ শেখ, সুধীন ধর, দেলোয়ার হোসেন, সুখেন ভট্টাচার্য ও আনোয়ার হোসেন। এ ছাড়া আরও ৩২ জন বিপ্লবী গুলিবিদ্ধ হন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সুধীন ধর ও বিজন সেন ছিলেন রেলশ্রমিক। হানিফ শেখ ছিলেন কুষ্টিয়া মোহিনী মিলের শ্রমিকনেতা। সুখেন ভট্টাচার্য ছিলেন ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের স্নাতক পরীক্ষার্থী। দেলোয়ার হোসেন ছিলেন রেলওয়ের লাল ঝান্ডা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা এবং আনোয়ার হোসেন ছিলেন খুলনার দৌলতপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্র ফেডারেশনের নেতা।

দিবসটি উপলক্ষে আজ বুধবার সকালে সিপিবির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেনের (প্রিন্স) নেতৃত্বে দলের নেতারা রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে খাপড়া ওয়ার্ডের সামনে নির্মিত স্মৃতিসৌধে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। দেশ স্বাধীনের পরে ১৯৭২ সালে এই স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।

শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে সিপিবি নেতারা রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে বিভাগীয় কমিশনার দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের কাছে তিন দফা দাবিসংবলিত স্মারকলিপি পেশ করেন। স্মারকলিপিতে খাপড়া ওয়ার্ডে দেশের ইতিহাসের প্রথম জেল হত্যার ঘটনাটিকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে ২৪ এপ্রিলকে ‘জাতীয় শহীদ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা, খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি সবার জানার জন্য পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং নিহত সাত বিপ্লবীকে জাতীয় শহীদ হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানানো হয়।

পরে বিকেলে রাজশাহী শহরের সাহেববাজার বড় মসজিদ মোড়ে খাপড়া ওয়ার্ড দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশেও এই তিন দাবি উত্থাপন করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিপিবির বিভাগীয় সমন্বয়ক ইসমাইল হোসেন। সেখানে বক্তব্যে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘শহীদদের স্বপ্ন ছিল শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা। আজ দেশ গণতন্ত্রহীন, বৈষম্য চরম পর্যায়ে। লুটপাট–দুর্নীতি সীমাহীন। নব্য ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন চলছে।’ এ অবস্থার পরিবর্তনে সাহস ও দৃঢ়তা নিয়ে এই শাসনের অবসান এবং ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাগীব আহসান মুন্না বক্তব্য দেন।