১৪ বছরে ১০ লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়েছে

রাজধানীর তোপখানা রোডে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার বিকেলে সভা করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারাছবি: সংগৃহীত

গত ১৪ বছরে সরকারের সহযোগিতায় ১০ লাখ কোটি টাকার বেশি দেশ থেকে পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। মঞ্চের নেতারা বলছেন, বেসরকারি পর্যায়ে রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন এবং দফায় দফায় এর মেয়াদ বাড়ানোর মাধ্যমে সরকার কিছু ব্যবসায়ীকে ব্যাপক আয়ের পথ তৈরি করে দিয়েছে।

আজ বুধবার বিকেলে গণতন্ত্র মঞ্চের এক সভায় নেতারা অভিযোগ করে বলেন, কোনো বিদ্যুৎ না নিয়েই গত ১১ বছরে সরকার কিছু বিদ্যুৎ কোম্পানিকে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। আর এখন ভর্তুকি কমানোর নামে কয়েক দিন পরপর গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়ানো হচ্ছে।

নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আখতার হোসেন, গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহম্মদ রাশেদ ও জেএসডির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী।

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিকে অযৌক্তিক উল্লেখ করেন মঞ্চের নেতারা। তাঁদের ভাষ্য অনুযায়ী, বিদ্যুৎ খাতে সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাটের দায় জনগণের কাঁধে চাপানো হচ্ছে। পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির চাপ শুধু শিল্পোদ্যোক্তাদের ওপর নয় বরং সাধারণ ভোক্তাদের ওপরও এসে পড়বে। পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।

নেতারা আরও বলেন, এমনিতেই সারা দেশে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং চলছে। লোডশেডিংয়ের কারণে দেশের কোথাও কোথাও দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। এ কারণে কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ব্যবস্থার পাশাপাশি যার প্রভাব পড়ছে রপ্তানি খাতে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে ত্বরান্বিত করবে, অন্যদিকে রপ্তানি খাতের ওপর আরও বেশি চাপ তৈরি হবে। মঞ্চের নেতা অবিলম্বে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান।  

আগামী ৬ ডিসেম্বর বেলা তিনটায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির ওপর গুলি, হত্যা, নিপীড়ন, নির্যাতন, মামলা, হামলার প্রতিবাদে এই সমাবেশ ডাকা হয়েছে।