বিএনপি ডামি দল, সহিংসতা করলে কঠোর হস্তে দমন: ওবায়দুল কাদের
আন্দোলন কর্মসূচির নামে সহিংসতা করলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপিকে ‘ডামি দল’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনে বিএনপির নেতা–কর্মীরাও সাড়া দেবেন না। ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ অব্যাহত থাকবে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণ থেকে শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি এ শীতবস্ত্র বিতরণ করে।
বিএনপির কর্মসূচি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন্দোলন চালান। কিন্তু আন্দোলনের নামে সহিংসতা করবেন, মানুষের রুজিরোজগারে বাধা দেবেন, হরতাল-অবরোধের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করবেন, এটা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। এসব ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেক ভোগান্তি এ দেশে হয়েছে। আন্দোলনের নামে মানুষকে অনেক কষ্ট দিয়েছেন। আর এসব অপকর্ম করলে তার শাস্তি পেতেই হবে। কঠোরভাবে দমন করব, এটাই সিদ্ধান্ত আমাদের। আপনারা যত আন্দোলন করুন, আমাদের শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ অব্যাহত থাকবে।’
বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন্দোলন করেন। ২৮ অক্টোবর এ দেশে আবার পাঁচ বছর পর আসবে। তখন করবেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলন করার চেষ্টা করবেন। আপাতত আন্দোলনে জনগণ দূরে থাক, বিএনপির নেতা–কর্মীরা সাড়া দেবেন না। জনগণ যে আন্দোলনে নেই, সেটা কিসের আন্দোলন। হতাশ হয়ে বিএনপির নেতা–কর্মীরাও আসবেন না।’
‘বিএনপি ডামি দল’
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে এখন বিএনপি হচ্ছে ডামি দল। আর কোনো ডামি দলের দরকার নেই। ওরা (বিএনপি) ডামি হয়ে গেছে। শোকে পাথর হয়ে গেছে। নেতা-কর্মীদের ঘুম নেই। সব আশা হারিয়ে ফেলেছে, সব হতাশায়। ওরা আন্দোলন করবে? তিনি বলেন, বিএনপির এ মুহূর্তে কোনো আশা নেই। নিষেধাজ্ঞাও নেই, ভিসা নীতিও নেই, ভিসা নিষেধাজ্ঞার আশায় আশায় দিন চলে যায়, রাত পোহায় এ হলো বিএনপি।
নির্বাচন না করে বিএনপি যে ভুল করেছে ‘অচিরেই’ তা টের পাবে বলে উল্লেখ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘তাদের এখন কালো পতাকা মিছিল, এটা হচ্ছে শোক পালনের কর্মসূচি। কালো পতাকা শোকের চিহ্ন, তাহলে তারা নিজেরাই জাতিকে বলে দিচ্ছে আমরা (বিএনপি) পরাজয় বরণ করেছি। সে জন্য আমরা আজকে শোকের কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছি।’
‘লবিংয়ে ওস্তাদ দল বিএনপি’
ওবায়দুল কাদের বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার হয়েছেন। এখন তাঁরা আইনগতভাবে মোকাবিলা করুক। অপরাধের সঙ্গে যাঁরা জড়িত নন, আইনি প্রক্রিয়ায় বের হয়ে যাবেন। তিনি বলেন, ‘কোনো দেশে অপরাধ করলে শাস্তি হবে না? আমেরিকার কথায় আমরা ছেড়ে দেব? এটা কোনো কথা। তাহলে ট্রাম্পের (ডোনাল্ড ট্রাম্প) বিচার কেন হচ্ছে? ৯১টি অভিযোগে ট্রাম্পের বিচার হচ্ছে আমেরিকার আদালতে। যে দেশের প্রেসিডেন্ট আজ শাস্তি পাচ্ছে। প্রেসিডেন্টের আদালতে দাঁড়ানোও শাস্তি। সেই দেশ আমাদের কীভাবে বলে অপরাধীদের ছেড়ে দিতে হবে। ২৫ হাজার না কত হাজার। আমাদের জেলে এত লোক নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, ১১ থেকে ১২ হাজারের মতো অভিযুক্ত বিএনপির নেতা-কর্মী জেলে আছেন।’ তিনি বলেন, জাতিসংঘকে দিয়েও তারা বলাচ্ছে ২৫ হাজার জেলে আছে। লবিং ভালোই করে। লবিংয়ের (তদবির) ওস্তাদ এ দল (বিএনপি)।
যুক্তরাষ্ট্রের গত নির্বাচন নিয়ে দেশটির পরাজিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারচুপির অভিযোগ তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচনের উপদেশ দেয়। সুষ্ঠু নির্বাচন আগে নিজেরা করুন, তারপর উপদেশ।’
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও উপকমিটির সদস্যসচিব আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা–১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ প্রমুখ।