দুই দিনের পদযাত্রায় নিহত একজন, গুলিবিদ্ধ ২ হাজার: বিএনপি

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী
ফাইল ছবি

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মঙ্গল ও বুধবারের বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলায় একজনকে নিহত হয়েছেন। এ সময় অন্তত তিন হাজার নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় দুই হাজার নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নেতা-কর্মীদের হতাহত হওয়ার এ দাবি। দুই দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলার চিত্র তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

রুহুল কবির রিজভী গত দুই মাসে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তারের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত ১৯ মে থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৩১০টি মামলা করা হয়েছে। এতে ১১ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর পদযাত্রা কর্মসূচির সাফল্যে জনগণের রায় প্রতিফলিত হয়েছে। সরকারের পদত্যাগের পক্ষে জনগণের রায় ঘোষিত হয়েছে এ কর্মসূচিতে। মঙ্গলবার ঢাকাসহ সারা দেশে পদযাত্রা এবং বুধবারও ঢাকা মহানগরের পদযাত্রায় সর্বস্তরের মানুষের সমাগম ঘটে।

এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যে ‘প্রতিহিংসার জ্বালা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে’ দাবি করে রুহুল কবির বলেন, এ কারণে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও মহানগরীতে পদযাত্রায় হামলা চালানো হয়েছে। লক্ষ্মীপুরে কৃষক দল নেতা সজীব হাসানকে হত্যা করা হয়েছে। গুলি ও অস্ত্রের আঘাতে জখম এবং পঙ্গু করা হয়েছে কয়েক হাজার নেতা-কর্মীকে।

সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশের ঘটনা তুলে ধরেন রুহুল কবির। তিনি বলেন, দিনাজপুরে পদযাত্রা কর্মসূচিতে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও সৈয়দপুরের বিএনপির নেতা-কর্মীদের বহনকারী গাড়িতে হামলা চালিয়ে শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাঁদের হামলায় বিএনপির দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।

রুহুল কবির আরও বলেন, বাগেরহাট জেলা বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি শেষে ফেরার পথে আওয়ামী লীগের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন জেলা বিএনপির নেতা মাসুদ রানা, ফকিরহাট উপজেলা বিএনপির নেতা ইফতেখার আহমেদ পলাশ, শেখ আলমগীর কবির, যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্লা রাজু আহমেদ, উপজেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আসাদুজ্জামান পলাশ, ছাত্রদল নেতা মাইনুল ইসলাম, সাব্বির ও আবু হুরাইয়াসহ ১৫ থেকে ২০ জন নেতা-কর্মী।

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর হেনা এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক মাজেদুর রহমান জুয়েলকে নিজ বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন রুহুল কবির। তিনি বলেন, আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির নেতা আবু বক্কর, যুবদল নেতা রাজু ও তামিমকে দুপচাঁচিয়া থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

মঙ্গলবারের পদযাত্রা কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ হামলা চালালেও উল্টো বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দাগনভূঞা উপজেলার যুবদল নেতা আবদুর রহিম হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। এ সময় লক্ষ্মীপুর, ফেনী, খাগড়াছড়ি, বগুড়া, কিশোরগঞ্জ, জয়পুরহাট, টাঙ্গাইল, পিরোজপুর ও নেত্রকোনার হামলার ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি।