জোট শরিকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে শিগগিরই কর্মসূচি: নজরুল ইসলাম খান
চীন সফরে প্রধানমন্ত্রী যে পরিমাণ অর্থসহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন, এ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে তাঁদের গাড়িচালক পর্যন্ত একেকজন দুর্নীতিবাজ তার চেয়ে বেশি টাকার দুর্নীতি করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা নজরুল ইসলাম খান। এ রকম একটা বাস্তবতা থেকে দেশকে উদ্ধার করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে নজরুল ইসলাম খান এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির লিয়াজোঁ নেতা ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জানান, সবার সঙ্গে আলোচনা শেষ হলে খুব শিগগির তাঁরা কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
কর্মসূচি ঘোষণার ব্যাপারে বিলম্বের কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, কারণ, দেশটাকে শেষ করে ফেলা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এমন একটা সরকার, যে সরকারের নিযুক্ত প্রধান বিচারপতি সরকারের ইচ্ছেমতো কাজ না করার কারণে তাঁকে পদত্যাগ ও দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। এরপর আমরা দেখলাম, তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এসেছে সরকার এবং দুর্নীতিতে তাঁর সাজা হয়েছে। এ সরকারের নিযুক্ত সাবেক প্রধান সেনাপতি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত, সাবেক পুলিশ প্রধান দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এবং খুব বড় বড় সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে আরম্ভ করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গাড়িচালক পর্যন্ত। তাহলে এই সরকারই তো দুর্নীতিগ্রস্ত, এ কথাই তো বলতে হবে।’
কী পরিমাণ দুর্নীতি, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের ইঙ্গিত করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের দেশের সরকারপ্রধান সম্প্রতি একটি দেশে গেলেন। সেখান থেকে তিনি কিছু সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন। যে পরিমাণ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন, একেকজন দুর্নীতিবাজ তার চেয়ে বেশি টাকার দুর্নীতি করেছেন। এ রকম একটা বাস্তবতায় দেশ পড়েছে।’
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ইউয়ান (প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা) আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে চীন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এই মুহূর্তে মানুষ গণতন্ত্রের সংকট মোকাবিলা করছে। দেশে গণতন্ত্র নেই। এখানে জনগণের ভোটে কেউ নির্বাচিত হন না। তিনি আন্দোলনের শরিকদের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এক দফার যে আন্দোলন, সেই আন্দোলনেই আমরা আছি। তারই অংশ হিসেবে আমরা গণতন্ত্রের মুক্তি চাই, একটা নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দুর্নীতি-অনাচারের অবসান চাই, দেশের স্বার্থবিরোধী যেসব চুক্তি-সমঝোতা, তারও বাতিল চাই।’
প্রথমে মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে বৈঠক হয়।
এরপর ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, সব শেষে নুরুল আলম তালুকদারের নেতৃত্বে এলডিপির সঙ্গে পৃথক বৈঠক হয়। নজরুল ইসলাম খান ছাড়া বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান ও আবদুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।