‘ম্যাডাম যখনই বাইর হবে, অন্তত তাঁর গাড়িটা তো দেখতে পাব’
‘খুব দেখার ইচ্ছা ম্যাডামকে। দল করি, তাই ম্যাডামের জন্য যদি মরণও হয়, আফসোস নাই। তাঁরে দেখতে না পাইলেও ম্যাডাম যখনই বাইর হবে, অন্তত তাঁর গাড়িটা তো দেখতে পাব। দোয়া করি, আল্লাহ তাঁরে সুস্থ করুক।’
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে কথাগুলো বলছিলেন নীলফামারী থেকে আসা আমজাদ হোসেন। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। এই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
আমজাদ হোসেন বলেন, গতকাল রোববার তিনি ঢাকায় এসেছেন। খালেদা জিয়া যত দিন হাসপাতালে থাকবেন, তিনিও তত দিন এখানে অপেক্ষা করতে চান।
এই সময়ে পরিবারের দেখভাল কে করবে, জানতে চাওয়া হয় আমজাদ হোসেনের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘পরিবার চলছে। তিন-চার দিনের খরচ যা লাগে, দিয়ে আইছি।’
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে দেখতে, তাঁর স্বাস্থ্যগত অবস্থার খোঁজখবর নিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ভিড় করছেন নেতা-কর্মীরা।
আজ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সরেজমিন এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ভিড় দেখা যায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এখানে এসেছেন তাইজুল ইসলাম। তিনি যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানান। তিনি বলেন, ‘মনের আকুতি মেটাতে এসেছি। চেষ্টা করব, একনজর দেখার।’
চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে এসেছেন আজিজুল হক। তিনিও যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, ‘ম্যাডামকে দেখার সুযোগ না পেলেও এখানে এলে একটু ভালো লাগবে, তাই এসেছি। আজ রাতে আবার চট্টগ্রাম ফিরে যাব।’
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এসে দোয়া করছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। তাঁরা বলছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়ার প্রয়োজনীয়তা অনেক। তাঁর সুস্থতা দেশের জন্য জরুরি।
সকালে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফার্মেসি অ্যাসোসিয়েশনের নেতা-কর্মীদের দেখা যায়। তাঁরা এখানে খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া করেছেন।
সংগঠনটির ভাটারা থানার আহ্বায়ক জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘দেশনেত্রী অসুস্থ। তাঁর রোগমুক্তি উপলক্ষে এ আয়োজন। দেশের মানুষের কাছে আমরা আহ্বান জানাই, তাঁরা যেন তাঁর জন্য দোয়া করেন।’
চিকিৎসক ও বিএনপির নেতাদের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। গতকাল তিনি হাসপাতালের শয্যায় অল্প নড়াচড়া করতে পেরেছেন। কথাবার্তায় সাড়াও দিয়েছেন। গত দুই দিনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থায় কিছুটা উন্নতি থাকলেও এখনো তিনি ঝুঁকিমুক্ত অবস্থায় পৌঁছাননি। দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।