সাঈদীর সাজা ছিল মৃত্যু পর্যন্ত, তাহলে মৃত্যুর পর লাশ নিয়ে এমন আচরণ কেন, প্রশ্ন জামায়াতের

শুক্রবার সকালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য ঢাকায় একটি মিলনায়তনে এক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জামায়াত
ছবি: সংগৃহীত

রায় অনুযায়ী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর কারাদণ্ড ছিল মৃত্যু পর্যন্ত। মৃত্যুর পর তাঁর কোনো সাজা ছিল না। তাহলে সাঈদীর লাশ নিয়ে এমন আচরণ করা হলো কেন, সে প্রশ্ন তুলেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা ও আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দ। তিনি বলেন, এর চেয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ আর কী হতে পারে?

আজ শুক্রবার সকালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য ঢাকায় একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক দোয়া মাহফিলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ ওই প্রশ্ন তোলেন।

সাঈদী ‘অবিচারের শিকার’ হয়েছেন এবং তাঁর সাজাও ‘বিস্ময়কর’ বলে মন্তব্য করেন মতিউর রহমান আকন্দ। তিনি বলেন, মামলায় চারজন বিচারপতির মধ্যে তিনজন ভিন্ন ভিন্ন রায় দিয়েছেন। একজন বিচারপতি তাঁকে (সাঈদী) সব অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি রায়ে লিপিবদ্ধ রয়েছে। একজন বিচারপতি মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন। বাকি দুজন বিচারপতি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। সেখানে যাবজ্জীবনের ব্যাখ্যা দিয়েছেন আমৃত্যু কারাদণ্ড।

মতিউর রহমান বলেন, রায় অনুযায়ী কারাদণ্ড তো মৃত্যু পর্যন্ত ছিল। মৃত্যুর পরে তো কোনো সাজা ছিল না। তাহলে তাঁর (সাঈদী) লাশের সঙ্গে এমন আচরণ করা হলো কেন? কেন লাশ পরিবারের কাছে দেওয়া হলো না? কেন পরিবারের সদস্যদের দেখতে দেওয়া হলো না? এর চেয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ আর কী হতে পারে?

দোয়া মাহফিলে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমান বলেন, তিনি (সাঈদী) দুবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। কিন্তু কারাগারের ভেতরে সেই ধরনের চিকিৎসা পেতেন না। এর আগে বারডেম হাসপাতালে তাঁকে পাঁচটি রিং পরানো হয়েছিল। নিয়মানুযায়ী আবারও হার্ট অ্যাটাকের পর বারডেমেই নেওয়ার কথা। সেটা না করে সময়ক্ষেপণ করা হয়। পরিবারের সদস্যদের ধারেকাছেও যেতে দেওয়া হয়নি। এমনকি মৃত্যুর আগপর্যন্ত পরিবারের সদস্যদের দেখা করারই সুযোগ দেওয়া হয়নি। কতটা অমানবিক কাজ তারা করেছে। জটিল রোগী হলে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। সেটাও করা হয়নি।
এর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত এই দোয়া মাহফিলে আরও বক্তব্য দেন মাওলানা কামালুদ্দিন জাফরি, দলের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা যাইনুল আবেদীন, মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানি, সাঈদীর দুই ছেলে শামীম সাঈদী ও মাসুদ সাঈদী, আবদুস সবুর ফকির। এতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। পরিচালনা করেন দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ।