নিশিরাতের সরকারের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার সক্ষমতা নেই: অলি আহমেদ

‘বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থির পরিস্থিতিতে করণীয়’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এলডিপির প্রেসিডেন্ট অলি আহমদ
ছবি: সংগৃহীত

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট অলি আহমদ বলেছেন, ‘বিনা ভোটে নির্বাচিত নিশিরাতের সরকারের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করার সক্ষমতা নেই। শেখ হাসিনা অবৈধ পন্থায় জোরজবরদস্তি করে ১৪ বৎসর দেশ শাসন করছেন। আজ আমরা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, যুবসমাজের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।’

‘বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থির পরিস্থিতিতে করণীয়’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমদ এ কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর পূর্ব পান্থপথ এলডিপির দলীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে অলি আহমদ বলেন, ‘প্রতিশোধের রাজনীতি চিরদিনের জন্য পরিহার করুন। যত দ্রুত সম্ভব সৎ, শিক্ষিত, দেশপ্রেমিক, নিষ্ঠাবান এবং দেশের মানুষের আস্থাভাজন ব্যক্তিদের দ্বারা গঠিত একটি জাতীয় সরকারের কাছে সসম্মানে ক্ষমতা হস্তান্তর করে প্রস্থান করুন। এটাই হবে রাজনৈতিক পরিপক্বতা এবং বুদ্ধিমানের কাজ। মনে রাখতে হবে, দেয়ালে মাথা ঠুকলে দেয়াল ফাটে না, ফাটে মাথা।’

অলি আহমদ বলেন, সরকার সীমাহীন অদক্ষতা, লাগামহীন দুর্নীতির কারণে ক্রমশ একঘরে হয়ে পড়েছে।

অলি আহমদ বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলায় বিএনপির সাত–আটজন নেতাকে রাজনৈতিক কারণে হত্যা করা হয়েছে। কয়েক শ নতুন মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। হাজার হাজার বিরোধীদলীয় নেতা–কর্মীদের হয়রানি করার জন্য আসামি করা হয়েছে। পুলিশের নির্যাতনের কারণে অনেকে নিজ গৃহে ঘুমাতে পারে না। কিছু কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারী অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ এবং তাদের নিজের স্বার্থ রক্ষার জন্য, অবৈধ সরকারকে নগ্নভাবে অবৈধ কর্মকাণ্ডে সাহায্য করে যাচ্ছে।

অলি আহমদ আরও বলেন, গত ১২ বছর ধরে গ্রামীণ অর্থনীতি সচল রাখার জন্য নিশিরাতের সরকার উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো প্রকল্প হাতে নেয়নি। বর্তমানে মেগা প্রকল্পের সংখ্যা ২০, যা ১৮ কোটি মানুষ এবং দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের জন্য দায়ী বলা যায়। বর্তমানে সরকারের ঋণ ১৪০ বিলিয়ন ডলার, যা আগামী পাঁচ মাস পর থেকে পরিশোধ আরম্ভ হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পে উৎপাদন ব্যতীত বিরাট অঙ্কের সুদের টাকা পরিশোধ করতে হবে। রাশিয়া, চীন ও জাপান থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে ৪৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অহেতুক সময় বৃদ্ধি, অদক্ষতা এবং দুর্নীতির কারণে ক্রমাগতভাবে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অলি আহমদ বলেন, দুর্নীতি এবং টাকা পাচারের কারণে সমাজের অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি না থাকার কারণে বর্তমান সংকট সৃষ্টি হয়েছে এবং রিজার্ভ দ্রুত কমে যাচ্ছে। দেশ–বিদেশের কেউ এই সরকারের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। সুতরাং কোনো অবস্থাতেই বর্তমান সরকারের পক্ষে এই সংকট থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নেয়ামূল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, এস এম মোর্শেদ, খায়রুল কবির পাঠান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।