খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই ‘সংকটময়’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াফাইল ছবি

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তিনি আগের মতোই ‘সংকটময় মুহূর্তে’ রয়েছেন বলে জানা গেছে তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড ও বিএনপি সূত্রে।

খালেদা জিয়া গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত শনিবার দিবাগত রাতে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও বিএনপি নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছিলেন, খালেদা জিয়া সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন। গতকাল রোববার জানতে চাইলে মেডিকেল বোর্ড সূত্র একই কথা বলেছে।

এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে গতকাল রাতে দলের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) অবস্থা আগের মতোই; তিনি দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকায় তাঁর “হসপিটাল ওরিয়েন্টেড ইনফেকশন” (সংক্রমণ) নিয়ন্ত্রণ করতে চিকিৎসকেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।’

৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ২৩ নভেম্বর দ্রুত তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। মেডিকেল বোর্ডের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় বিদেশ নেওয়া সম্ভব হয়নি।

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে শনিবার মধ্যরাতে করা ব্রিফিংয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই ওনার (খালেদা জিয়া) অবস্থার উন্নতি হয়েছে, এ কথা বলা যাবে না।...ওনার (খালেদা জিয়া) অবস্থা অত্যন্ত জটিল এবং উনি একটা সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন।’

এই চিকিৎসক বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২৩ নভেম্বর এখানে (এভারকেয়ার হাসপাতাল) ভর্তি হয়েছেন; ভর্তি হওয়ার পরবর্তীতে ওনার (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি হয়েছিল।’ তিনি জানান, শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে খালেদা জিয়াকে কেবিন থেকে সিসিইউ (করোনারি কেয়ার ইউনিট) এবং সেখানে থেকে পরে আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র) নেওয়া হয়।

দেশি-বিদেশি চিকিৎসকেরা বিএনপির চেয়ারপারসনকে চিকিৎসা দিচ্ছেন উল্লেখ করে চিকিৎসক জাহিদ হোসেন আরও বলেন, খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ চিকিৎসক জুবাইদা রহমান তাতে যুক্ত রয়েছেন।

এদিকে জুবাইদা রহমান গতকাল রাত আটটার কিছু পরে খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। এর কিছুক্ষণ পর যান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানু। খালেদা জিয়ার বড় বোন সেলিনা ইসলামও গতকাল তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান।

মাকে দেখতে হাসপাতালে তারেক রহমান

খালেদা জিয়াকে দেখতে গতকাল রাত ১০টা ৫৭ মিনিটে হাসপাতালে যান তাঁর ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মাকে দেখে ও তাঁর চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়ে রাত ১২টা ৯ মিনিটে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান তিনি। তারেক রহমান ১৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন। ওই দিনই মাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর গত শনিবারও হাসপাতালে গিয়েছিলেন তারেক রহমান।