দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে অনেকে স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করছেন: রিজভী
বিভিন্ন স্থানে প্রভাব খাটিয়ে স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টায় তৎপর একশ্রেণির ব্যক্তিদের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। কারও নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেছেন, দীর্ঘ দুঃসময়ে প্রবাসে অবস্থান করে নিজেদের খেয়ালখুশিমতো জীবন যাপন করেছেন। এখন দেশে ফিরে এসে প্রভাব খাটিয়ে আরও বেশি স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টায় তৎপর থেকে প্রশাসন, ব্যবসায়ী মহল এবং মিডিয়া হাউসসহ নানা প্রতিষ্ঠানে খবরদারি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এসব ব্যক্তির কেউ বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করে না।
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এই কথাগুলো বলে এ ধরনের খবরদারি সম্পর্কে সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানান।
রিজভী বলেন, বিগত ১৬-১৭ বছর দুর্বিষহ ফ্যাসিবাদী অপশাসন সহ্য করতে গিয়ে বিএনপির অসংখ্য প্রাণ ঝরে যায়। অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে, চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়ে গেছে। অর্থনৈতিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে পর্যুদস্ত হয়ে অনেকে নিজ দেশেই বাস্তুহারা শরণার্থীতে পরিণত হয়েছেন। ৫ আগস্টের বিপ্লবের পর বিএনপি নিপীড়িত দেশবাসীকে সোনালি ভবিষ্যতের চিন্তায় যখন উদ্বুদ্ধ করছে, তখন দলের কয়েকজন স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির সুবিধাবাদী ভূমিকা সম্পর্কে সবাইকে ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন।
বিএনপি নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, যখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, দেশনায়ক তারেক রহমানসহ বিএনপির ৬০ লাখ নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলা ও ফরমায়েশি সাজা দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তির যবনিকাপাত ঘটানোর আয়োজন করা হয়েছিল, নির্যাতন-নিপীড়নে নেতা-কর্মীরা যখন অসহায়—ঠিক সেই সময়ে নিজেদের সুখ বৃদ্ধির জন্য দেশ ও দল ছেড়ে অনেকেই বিদেশে পাড়ি জমান। এই দুঃসময়ে অনেকের কোনো খবর ছিল না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনুকূল পরিবেশে নিজ স্বার্থে প্রশাসনকে প্রভাবিত করাসহ নানা প্রতিষ্ঠানে হানা দিচ্ছে বলে দল বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরেছে।
এ ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন, পুলিশ ও মিডিয়া হাউসকে লক্ষ্য করে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কেউ কেউ ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, অথচ দলের দুঃসময়ে, ক্রমবর্ধমানভাবে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পৈশাচিক নির্যাতন যখন বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তখন নিজেদের নিরাপদ রাখতে এঁরা বিদেশে শান্তি-স্বস্তিতে দিন যাপন করছেন। রাজনৈতিক দুর্যোগের সময় এঁদের জীবন কেটেছে নিরাপদে। তাঁরা এখন দেশে ফিরে এসে প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসন, ব্যবসায়ী এবং মিডিয়া হাউসসহ নানা প্রতিষ্ঠানে খবরদারির চেষ্টা করছেন।
রিজভী বলেন, ‘আমি এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত খবরদারি সম্পর্কে সচেতন থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসহ সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ করছি। এসব ব্যক্তি বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করে না।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান ও আবদুস সালাম আজাদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।