আনিসুল ইসলামের বাসভবনে হামলা জাতীয় পার্টিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের (এনডিএফ) সভাপতি ও জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের গ্রামের বাড়ি হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। গতকাল শুক্রবার রাতে। হাটহাজারী, চট্টগ্রামছবি: পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া

জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বাসভবনে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি। তাদের অভিযোগ, জাতীয় পার্টিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর গুলশানে হাওলাদার টাওয়ারে জাতীয় পার্টির জরুরি প্রেসিডিয়াম বৈঠকে এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। দলের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের সঞ্চালনায় এ বৈঠক হয়।

বৈঠক শেষে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, দেশকে অস্থিতিশীল করে জাতীয় নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ধারাবাহিকভাবে সহিংসতা ও নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে। পার্টির চেয়ারম্যানের বাসভবনে হামলা সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ।

প্রেসিডিয়াম বৈঠকের শুরুতে জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুতে ঘোষিত রাষ্ট্রীয় শোকের প্রতি সম্মান জানিয়ে তাঁর আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

সভায় জানানো হয়, শুক্রবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার সাদেক নগর গ্রামে আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বাসভবনে শতাধিক দুর্বৃত্ত অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করে এবং ব্যাপক লুটপাট চালায়। প্রেসিডিয়াম সভা থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

বৈঠকে দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর, ছায়ানট ও উদীচী কার্যালয় এবং রাজনৈতিক নেতাদের বাসভবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

এ ছাড়া বৃহস্পতিবার রাতে ময়মনসিংহে এক হিন্দু যুবককে প্রকাশ্যে হত্যার পর লাশে অগ্নিসংযোগ, নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা, খুলনায় সাংবাদিক হত্যা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনে হামলার চেষ্টা, লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার বাসভবনে অগ্নিসংযোগ ও শিশু হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

প্রেসিডিয়াম সভার প্রস্তাবে বলা হয়, এসব ধারাবাহিক সহিংসতা শুধু দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে না, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। রাজনৈতিক নেতাদের বাসভবন, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম কার্যালয় ও কূটনৈতিক স্থাপনায় হামলার ঘটনাগুলো একটি সুপরিকল্পিত অশুভ চক্রান্তের ইঙ্গিত বহন করে বলে মনে করছে দলটি।

সভায় আরও বলা হয়, জাতীয় পার্টি একটি নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ‘জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট’ নামে একটি রাজনৈতিক জোট গঠন করা হয়েছে। তবে চলমান সহিংস ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয় বলে সভায় মত প্রকাশ করা হয়।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন, শফিকুল ইসলাম, লিয়াকত হোসেন, জহিরুল ইসলাম ও মোস্তফা আল মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম, নাসরিন জাহান, সোলায়মান আলম শেঠ, মাশরুর মাওলা, নাজমা আক্তার, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, আরিফুর রহমান খান, নুরুল ইসলাম, সরদার শাজাহান, ফখরুল আহসান শাহজাদা, বেলাল হোসেন, নুরুল ইসলাম ওমর, আমানত হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, শাহ জামাল ও শেখ মতলুব হোসেন।

আরও পড়ুন