বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি

নোয়াখালীর চৌমুহনীতে রামঠাকুর আশ্রমের সামনের একটি দোকানে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নেভান
ফাইল ছবি

কোনো ঘটনা ঘটলে ভিন্ন মতাদর্শের রাজনৈতিক দলকে দায়ী করার প্রবণতা ত্যাগ করতে হবে। বস্তুনিষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও বিচারবিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রতিটি সন্ত্রাসী ঘটনার প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিবিষয়ক এক প্রতিবেদনে এমন সুপারিশ এসেছে। চৌমুহনীতে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন উপাসনালয়ে দুষ্কৃতকারীদের হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের স্থান পরিদর্শনের পর এই প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।

আইনজীবী সমিতির ১৪ সদস্যের কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ পদে আছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ব্যক্তিরা। তবে যাঁরা প্রতিবেদন দিয়েছেন, সেই পাঁচ সদস্যের সবাই বিএনপি-সমর্থিত।

আইনজীবীদের দেওয়া প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়েছে, ভিন্নধর্মাবলম্বীদের মন্দির, উপাসনালয়, বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অতীতে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনায় প্রকৃত দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন নিরপেক্ষ, স্বচ্ছতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া সব ধর্মের মানুষকে দেশের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা এবং ধর্ম ও বর্ণের ভিত্তিতে বিভাজন করে বৈষম্য সৃষ্টি না করার জন্য সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

সুপারিশে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিত্যাগ করে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে তদন্তের ব্যবস্থা করা, স্থানীয় লোকজনের রেকর্ড করা ভিডিও দৃশ্য বিশ্লেষণ করে আসল দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করা ও গ্রেপ্তার করা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা কেন নিষ্ক্রিয় ছিলেন, তা খুঁজে বের করার ব্যবস্থা করা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনার জন্য উপাসনালয়গুলোতে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা এবং মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি দূর করার জন্য উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া মন্দিরগুলোতে কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে হিসাব করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করারও সুপারিশ করা হয়।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মো. রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী অপর সদস্যরা হলেন সহসম্পাদক মাহমুদ হাসান, কার্যকরী কমিটির সদস্য এস এম ইফতেখার উদ্দিন মাহমুদ, পারভিন কাউসার ও রেদওয়ান আহমেদ।