আশ্রয় পেলেন সেই 'অজানা' আবদুর রহমান

হাস্যোজ্জ্বল আবদুর রহমান। দক্ষিণ পাইকপাড়া, মিরপুর, ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর। ছবি: আবদুস সালাম
হাস্যোজ্জ্বল আবদুর রহমান। দক্ষিণ পাইকপাড়া, মিরপুর, ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর। ছবি: আবদুস সালাম

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির সময় ফরমে নামের ঘরে লেখা ছিল ‘অজানা’। গত ২৭ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আবদুর রহমানের পরিচয় কিংবা স্বজনদের পায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই দিন কে বা কারা ৭০ বছরের বেশি বয়সী এই রোগীকে হাসপাতালে রেখে যায়। গতকাল সোমবার রাতে আবদুর রহমানকে আশ্রয় দিয়েছে ঢাকার চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার।

আবদুর রহমানকে নিয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো অনলাইনে ‘হাসপাতালের নথিতে আবদুর রহমান “অজানা” রোগী’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ও ভিডিও প্রকাশিত হয়। পরদিন চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা মিলটন সামাদ্দার প্রথম আলোর ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করে লেখেন, ‘পরিচয়হীন বৃদ্ধ রোগীর দায়িত্ব নেবে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার।’ অবশেষে গতকাল রাতে সব প্রক্রিয়া শেষ করে আবদুর রহমানকে মিরপুরের বৃদ্ধাশ্রমে নিয়ে যান মিলটন সামাদ্দার।

নতুন ঠিকানায় আবদুর রহমান। দক্ষিণ পাইকপাড়া, মিরপুর, ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর। ছবি: আবদুস সালাম
নতুন ঠিকানায় আবদুর রহমান। দক্ষিণ পাইকপাড়া, মিরপুর, ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর। ছবি: আবদুস সালাম

আজ মঙ্গলবার মিরপুরের দক্ষিণ পাইকপাড়ার সেই বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে দেখা গেল, আবদুর রহমান বেশ ভালো আছেন। পরিষ্কার ও ঝকঝকে বিছানায় বিছানো রঙিন ওয়ালক্লথ। পাশে কম্বল এবং মাথার নিচে ফুলের প্রিন্ট করা কভারে ভরা বালিশ। টি–শার্ট ও লুঙ্গি পরে আছেন। আগের চেয়ে বেশ উৎফুল্ল মনে হলো তাঁকে। প্রতিবেদককে দেখে কপালে হাত ঠেকিয়ে সালাম দেওয়ার ভঙ্গি করলেন, হাসলেন। কথা বলার চেষ্টা করলেন, কিন্তু কিছু বোঝা গেল না।

বৃদ্ধাশ্রমের দোতলা ভবনটিতে এখন মোট ৬১ জন অভিভাবকহীন বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা আছেন। আরও আছে পাঁচজন প্রতিবন্ধী শিশু। কথা হলো চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা মিলটন সামাদ্দারের সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘প্রথম আলোর মাধ্যমে প্রথম জানতে পারি তাঁর সম্পর্কে (আবদুর রহমান)। তারপর খোঁজ নিতে শুরু করি। আবদুর রহমানকে এখানে আনতে আমাকে কয়েকজন সাহায্য করেছেন। তবে প্রধান ভূমিকা রেখেছে প্রথম আলো। আমার পথচলায়ও প্রথম আলোর বিশেষ অবদান রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আবদুর রহমান আমাদের কাছে যত দিন থাকবেন, ভালো থাকবেন। আমি নিজেদের মা–বাবার মতো করেই তাঁদের রাখি।’