ইভিএমে ১০ ভোটের ৮টি নৌকায় আর ২টি ধানের শীষে যাবে, সেভাবে সেট করা

ঠাকুরগাঁওয়ে আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, ইভিএমের যেকোনো বোতাম টিপলে ১০ ভোটের ৮টি নৌকায় আর ২টি ধানের শীষে যাবে; সেভাবেই প্রোগ্রাম সেট করা আছে। প্রোগ্রাম যেভাবে ঠিক করা হবে, মেশিন সেভাবেই কাজ করবে। আজ মঙ্গলবার সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকায় নিজ বাসভবনে প্রথম ধাপের পৌর নির্বাচন নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা তো নির্বাচনই হয়নি, এটাকে আবার মূল্যায়ন কিসের? এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কখনোই কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি।’ তবে কি নির্বাচনের ফলাফল পূর্বনির্ধারিত ছিল?—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এগুলোর কিছু কিছু পূর্বনির্ধারিত। কিছু ইভিএমের কারসাজি। ইভিএমে যেভাবে প্রোগ্রাম ঠিক করা থাকে, সেটা সেভাবেই কাজ করবে। ইভিএমের যেকোনো বোতাম টিপলেই ১০টি ভোটের ৮টি চলে যাবে নৌকায় আর ২টি যাবে ধানের শীষে। আমি হাস্যকর কোনো কথা বলছি না, এটাই সত্য। ইভিএমে এমনই করেছে আওয়ামী লীগ।’

প্রথম ধাপের পৌর নির্বাচন শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত ২৪টি পৌরসভার নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। ভোটার উপস্থিতিও অনেক বেশি ছিল। একটি ‘সাকসেসফুল’ নির্বাচন হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিসের “সাকসেসফুল”? এটা সম্পূর্ণভাবে ভুয়া। কারণ নির্বাচন কমিশনটাই ভুয়া।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার ভূমিকা পালন করেছিল বলে দাবি করে, সেই আওয়ামী লীগ আজ পুরোপুরি একটা কর্তৃত্ববাদী দলে পরিণত হয়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কখনোই কোনো সরকার পরিবর্তন হয় না। কিন্তু সেখানেও আওয়ামী লীগ সরকার দুর্ভাগ্যজনকভাবে শক্তি প্রয়োগ করেছে।’

২০২০ সালকে কীভাবে দেখছেন?—এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই বছরটা শুধু বিএনপির জন্য নয়, পুরো পৃথিবীর মানুষের জন্য খারাপ বছর। এ বছর কোটি কোটি মানুষ বেকার হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। করোনাভাইরাসের এই পরিস্থিতি বাংলাদেশে কয়েকটা বিষয় পরিষ্কার করেছে, তার মধ্যে একটি হলো বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সবচেয়ে ভঙ্গুর। এখানে সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে।’

এর সঙ্গে মির্জা ফখরুল যোগ করেন, ‘এই বছরই সরকারের কর্তৃত্ববাদের চেহারাটা প্রচণ্ডভাবে সামনে এসেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অনেক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই বছরে ধর্ষণ, দুর্নীতি বেড়েছে। আর জনগণের অধিকার হরণও এই বছরে সবচেয়ে বেশি হয়েছে। ২০২০ সালে আমরা ভালো কিছু দিতে পেরেছি বা দিয়েছি বলে বলতে পারি না। তবে আশা করতে পারি, ২০২১ সালে অন্তত জনগণের যে অধিকার সে অধিকার ফিরে পাব। সেই সঙ্গে প্রত্যাশা করব জনগণ তাঁদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ হবে।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আরও উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আমীন, সহসভাপতি নুর ই শাহদাৎ, আল মামুন আলম, সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন প্রমুখ।