করোনার দুঃসময়ে ফায়দা লুটতে চায় বিএনপি

জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা, ১৬ নভেম্বর
ছবি: ফোকাস বাংলা

হঠাৎ বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিএনপিকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি করোনার এই দুঃসময় কাজে লাগিয়ে নিজেদের ফায়দা লুটতে চাইছে। নিজেরা বাসে আগুন দিয়ে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে চাইছে। বিএনপি যেন এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করে।

সোমবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিএনপিকে দায়ী করে দেওয়া বক্তব্যের সমর্থনে সংসদে একটি অডিও রেকর্ড (ফোনালাপ) শোনান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বাস পোড়ানোর ঘটনা নিয়ে এক ব্যক্তি এবং এক নারীকে আলাপ করতে শোনা যায়। নারীকণ্ঠ বলছে, যুবদলের ছেলেরা একটা বাসে আগুন দিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) দুপর থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মোট ১১টি বাসে আগুন দেওয়া হয়।


প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বাস পোড়ানোর ঘটনা নিয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভোট হয়েছে উত্তরায় (ঢাকা–১৮ আসন), আর গাড়ি পোড়ানো হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ জন্য বিএনপিকে দায়ী করেছেন। বিএনপির নেতা–কর্মীদের নামে মামলা হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, সরকারের এজেন্টরা এই কাজ করেছে। এই ঘটনায় কারা জড়িত, তা বের করতে একটি সংসদীয় কমিটি গঠন করার দাবি জানান হারুন।


হারুনের বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সংসদের ফ্লোর নেন। তিনি দাঁড়িয়ে বলেন, প্রযুক্তি এখন অনেক এগিয়ে গেছে। তাঁর কাছে একটি ফোনালাপ আছে। তিনি সেটা শোনাতে চান। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের মুঠোফোন থেকে সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপ চালু করেন। মুঠোফোনটি মাইকের সামনে ধরে তা সবাইকে শোনান। রেকর্ড শোনানোর পর এবং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় উপস্থিত সরকারি দলের সদস্যরা টেবিল চাপড়ে সমর্থন জানান।


পরে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির সাংসদ হলেও হারুনকে প্রথম সারিতে বসানো হয়েছে। তিনি অনেক কথা বলেন। কিন্তু নিজের দল সম্পর্কে তথ্য জেনে তারপর হারুনের কথা বলা উচিত ছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কারা গাড়িতে আগুন দিয়েছে, সে ছবিও তাঁর কাছে আছে। একটি মিছিল শেষে দেশলাই দিয়ে বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। আরও ফোন রেকর্ড আছে। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, কারা আগুন দিয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি গাড়ি পোড়ানোর জন্য সরকারের এজেন্টদের দায় দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে কেন গাড়িতে আগুন দিয়ে বদনামের ভাগীদার হবে? জনগণের নিরাপত্তা দেওয়াই সরকারের দায়িত্ব।


সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, সংসদ পবিত্র জায়গা। এখানে এভাবে অসত্য তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত না করাই ভালো। তিনি বিএনপিকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার এবং নির্বাচন করলে তা ভালোভাবে করার আহ্বান জানান।