কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে মূল লড়াইয়ে লীগের নেতারাই

জেলা পরিষদ নির্বাচন
জেলা পরিষদ নির্বাচন

কুমিল্লা জেলা পরিষদের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের (বরুড়া উপজেলা) সদস্য পদে উপনির্বাচনে মূল লড়াইয়ে আওয়ামী লীগের নেতারাই মাঠে তত্পর রয়েছেন।
প্রার্থীরা হলেন বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. নাসির উদ্দিন, কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জসিম উদ্দিন, বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান ও সিঙ্গাপুর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। এর বাইরে কয়লা ব্যবসায়ী মো. আবদুল বাতেন এবং প্রজন্ম শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক একাডেমির সভাপতি তুহিন আহাম্মেদ রয়েছেন।
২৫ জুলাই ওই নির্বাচন হবে। নির্বাচনে ভোটারসংখ্যা ১৫৯। এর আগে ২৬ জুন বিকেলে ওই তফসিল ঘোষণা করা হয়। নির্দলীয় এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনগণের নির্বাচিত স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা এতে ভোট দেবেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির বর্তমান সদস্য মোহাম্মদ সোহেল সামাদ। এরপর ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি তিনি দায়িত্ব নেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ নেওয়ার জন্য পদত্যাগ করেন তিনি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ মার্চ স্থানীয় সরকার বিভাগের জেলা পরিষদ অধিশাখার উপসচিব জুলিয়া মঈন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৬ জুলাই এই ওয়ার্ডের উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ছয়জন প্রার্থীর সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁরা জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তবে বিগত নির্বাচনের মতো এবার নিয়ন্ত্রিত ও সামনে সিল মারার নির্বাচন যেন না হয়, সেটি প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে। মূল লড়াইটা এখানে হচ্ছে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মধ্যেই।
কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনের সাংসদ ও বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নাছিমুল আলম চৌধুরীর অনুসারী মো. নাসির উদ্দিন প্রার্থী হয়েছেন। তিনি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দীন আহমেদের ছেলে ও কংগ্রেস থেকে নির্বাচিত এমএলএ মৌলভি অছিম উদ্দিনের নাতি।
নাসির উদ্দিন বলেন, ‘পারিবারিক স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, দল ও সাংসদের সমর্থন আমাকে বাড়তি সুবিধা দেবে। এটি নির্দলীয় নির্বাচন। দলের বাইরেও সবার কাছে ভোট ও দোয়া চাইব। আশা করি ভালো করব।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ এন এম মইনুল ইসলামের অনুসারী মো. জসিম উদ্দিন ও মো. মফিজুর রহমান প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে জসিম উদ্দিন বিগত জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দ্বিতীয় হয়েছিলেন। তিনি কুমিল্লার ভারত-বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সংগঠন মোহনার সাংগঠনিক সম্পাদক। জসিম উদ্দিন বলেন, ‘জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। বিগত নির্বাচনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবার প্রত্যাশিত ফল পেতে চাই।’ অপর প্রার্থী মফিজুর রহমান বলেন, ‘জীবনে প্রথমবার নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আশা করি, ভোটাররা আমাকে রায় দেবেন।’
অপর প্রার্থী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে কনস্ট্রাকশন ব্যবসা ও সুপার মার্কেট আছে আমার। দেশে নিয়মিত আসা–যাওয়া করি। এই নির্বাচনে ভোটার জনপ্রতিনিধিরা। তাঁরা আমাকে রায় দেবেন বলে বিশ্বাস করি।’
কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন আবদুল বাতেন। তিনি বলেন, ‘আমি চট্টগ্রামে কয়লার ব্যবসা করি। এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ আছে। এলাকার মানুষের পাশে আছি। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’ আরেক প্রার্থী তুহিন আহাম্মেদ বলেন, ‘বরুড়ায় কয়েক বছর ধরে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী নানা ধরনের কাজ করেছি। কনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে আমাকে ভোটাররা ভোট দেবেন।’