কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নামে মামলা প্রত্যাহারের দাবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা
ছবি: প্রথম আলো

কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া যেসব শিক্ষার্থীর নামে মামলা হয়েছে, সেগুলোতে তাঁদের নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। অথচ চার বছর পেরোলেও মামলাগুলোর কোনো তদন্ত হয়নি। উল্টো শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে হয়রানির মধ্যে। এসব মামলা থেকে অব্যাহতির দাবি জানিয়েছেন রাজনীতিবিদ ও শিক্ষার্থীরা।

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরম খাঁ হলে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলা হয়। চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এ সভার আয়োজন করে।

সভায় শিক্ষাবিদ আবুল কাশেম ফজলুল হক এক ভিডিও বার্তায় বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য খারাপ ছিল না, তাঁদের ভালো উদ্দেশ্য ছিল।

শিক্ষার্থীদের যুক্তিসংগত দাবিগুলো সরকার মেনে নিয়েছে। তবে মামলাগুলো এখনো চলছে। শিক্ষার্থীদের এসব মামলা থেকে অবিলম্বে অব্যাহতি দেওয়া দরকার।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত রায় চৌধুরী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের নামে মামলা চলছে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের নামে করা মামলাও চলছে। বছরের পর বছর পেরোলেও এগুলোর কোনো সুরাহা করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ছাত্ররা আলোর দিশারী। ছাত্ররা সমাজকে পথ দেখান। অথচ ছাত্রদের হয়রানি করা হচ্ছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ভয় ও আতঙ্কে রাখার জন্য মামলাগুলো ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের নামে মামলাগুলো চার বছর ধরে ঝুলে আছে। এসব মামলার মেরিট না থাকার পরও ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এর কারণ, এসব মামলা দিয়ে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে।

গণফোরামের এই অংশের আরেক নেতা জগলুল হায়দার বলেন, ছাত্রদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন হয়েছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনে। সাধারণ শিক্ষার্থীরাই এতে অংশ নেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে কর্তৃত্ববাদী ও পারিবারিক রাজনীতি এ দেশের ওপর চেপে বসে আছে, সে রাজনীতি ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। ছাত্রদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

সভায় সংগঠনটির সদস্যসচিব ইসমাইল সম্রাট বলেন, প্রতি মাসে মামলার হাজিরা দিতে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হতাশার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছেন। অপর দিকে এসব মামলাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের বিপদে ফেলা হচ্ছে।

সভায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক দিদারুল আলম ভূঁইয়া, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক এ পি এম সুহেল, জাতীয় জনতার জোটের সমন্বয়ক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।