খলনায়ককে নায়ক বানানোর চেষ্টা পরিহার করুন: তথ্যমন্ত্রী

‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ: বাঙালির মুক্তির সড়ক’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আজ রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে
ছবি: প্রথম আলো

কোনো ব্যক্তি বা দলের নাম উল্লেখ না করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ইতিহাসের খলনায়ককে নায়ক বানানোর অপচেষ্টা পরিহার করার আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ: বাঙালির মুক্তির সড়ক’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। জাতীয় প্রেসক্লাব এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে হাছান মাহমুদ বলেন, ইতিহাসের খলনায়ককে নায়ক বানানোর অপচেষ্টা পরিহার করা হলে নতুন প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানবে। ইতিহাস বিকৃতির জন্য ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো থেকে মুক্তি মিলবে।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। যারা এই ভাষণকে নিষিদ্ধ করেছিল, ইতিহাসকে বিকৃত করেছিল, বঙ্গবন্ধুর নামটাও নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল, তারা ৭ মার্চ পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্ভবত আজকে তারা পালন করছে। এটি কোনো দুরভিসন্ধি নিয়ে পালন করা হচ্ছে কি না, তা তিনি জানেন না।

ইতিহাস বিকৃত করে কোনো লাভ হয়নি উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে মানুষের মনের মণিকোঠা থেকে মুছে ফেলা যায়নি। বরং বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বকীয় মহিমায় নতুন প্রজন্মের মনের গভীরে প্রোথিত হয়েছেন। যে ইতিহাসের বিকৃতি ঘটানো হয়েছিল, সেই বিকৃত ইতিহাস ইতিমধ্যেই মুছে গেছে। শুধু পুস্তক বা অন্য কোনো জায়গা থেকে মুছেছে, তা নয়। মানুষের মনের মণিকোঠা থেকেও বিকৃত ইতিহাস মুছে গেছে।

রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আসুন, সবাই সঠিক ইতিহাস মেনে নিই। সত্য ইতিহাসকে মেনে নিই। সত্য ইতিহাসকে ধারণ করি। সত্য ইতিহাসকে লালন করি। ইতিহাসকে মেনে নিয়ে আমরা যার যার অবস্থান থেকে রাজনীতি করি। ইতিহাসকে দয়া করে আমরা যেন বিকৃত না করি। জিঘাংসা, হিংসা পরিহার করে আমরা যার যার অবস্থান থেকে রাজনীতি করি।’

দায়িত্বে থাকলে অবশ্যই সরকারের সমালোচনা হবে বলে মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ। তবে তিনি অহেতুক সমালোচনা, জনগণকে বিভ্রান্ত করার সমালোচনা ও ইতিহাস বিকৃতি পরিহার করার আহ্বান জানান।

৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই ভাষণ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ বছর এই ভাষণ বাজেনি। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এই ভাষণ নিষিদ্ধ ছিল। এমনকি বঙ্গবন্ধুর নামটিও নিষিদ্ধ ছিল।

হাছান মাহমুদ বলেন, এই ভাষণের আবেদন ৫০ বছর আগে যেমন ছিল, আজকে ৫০ বছর পরও তার আবেদন একই রকম আছে।

সেমিনারে অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু মানবমুক্তির কথা বলেছেন। নিজেদের সৎ পথে পরিচালিত করতে পারলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা অর্জন করা সম্ভব হবে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক সিটি এডিটর অজিত কুমার সরকার। এতে আরও বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম, সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ।