খালেদা জিয়া তো হ্যামিলিনের বংশীবাদক: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ ‘পুতুল সরকার’ হিসেবে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এটা (আওয়ামী লীগ সরকার) আধিপত্যবাদের পুতুল সরকারে পরিণত হয়েছে। তারা এখানে শুধু তাদেরই এজেন্ডা বাস্তবায়িত করছে।
খালেদা জিয়ার কারাবন্দী দিবসে আজ বুধবার বিকেলে এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম এ অভিযোগ করেন। আলোচনা সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন।

দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় খালেদা জিয়ার অবদানের কথা তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশনেত্রী একজন ক্যারিশম্যাটিক লিডার। তিনি তো ছিলেন হ্যামিলিনের বংশীবাদক। লন্ডন থেকে এলেন, রোহিঙ্গারা এসে গেছে তখন। আমরা তাঁকে বললাম আপনার একবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিজিট করা দরকার। তিনি রাজি হলেন। আমরা কক্সবাজারে গেলাম। পথে পথে লাখ লাখ মানুষ যাওয়ার সময়ে এবং ফেরার সময়েও। আমার বিশ্বাস, এই মানুষগুলোকে সংগঠিত করে আমরা যদি রাজপথে নামতে পারি, এই গণতন্ত্রবিরোধী সরকারকে সরাতে পারব।’
এক-এগারোর সরকারের আমলে ২০০৭ সালে ২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করে। এই দিবসটি বিএনপি কারাবন্দী দিবস হিসেবে পালন করে। ওই সময় বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা শুরু হলো। আমাদের দেশের দু-তিনটি প্রখ্যাত পত্রিকাও একই সুরে কথা বলতে শুরু করল। সেই ধারাবাহিকতায় বেশ কয়েকটি দেশের ডিমপ্লোমেটরা টুইজডে ক্লাব বলে একটি ক্লাব তৈরি করল। সেই ক্লাবে আবার একটা আন্দোলন শুরু হলো মিলিতভাবে যে যোগ্য প্রার্থীর... । সবই ছিল একই সূত্রে গাঁথা।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা দেখেছি, তারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিভিন্ন নাটক তৈরি করেছে, বিভিন্নভাবে এক-এগারোর সেনা–সমর্থিত সরকার তৈরি হয়েছে, তার পরে দেখি যে দুই বছর সম্পূর্ণ অসাংবিধানিকভাবে সরকার নিয়ে গেছে এবং তারপরে একটা নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেছে, যে নির্বাচনটা ছিল ষড়যন্ত্রমূলক। কিন্তু খালেদা জিয়া একবারের জন্যও মাথা নোয়াননি।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকার যেমনিভাবে গায়ের জোরে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় ছিল, আজকের সরকারও গায়ের জোরে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে এবং একই কাজ করে যাচ্ছে। এক-এগারোর সরকার দেশে বিরাজনীতিকরণের জন্য এসেছিল। দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করা ও মাইনাস টুয়ের নামে মাইনাস ওয়ান অর্থাৎ​ খালেদা জিয়াকে মাইনাস করাই তাদের উদ্দেশ্য। আজকে যারা ক্ষমতায়, তারা সেই ধারাবাহিকতার সরকার।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, এই সরকারের ভিত্তি হচ্ছে মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকারের সময়ে। আপনারা যদি ভালোভাবে বিশ্লেষণ করেন, তাহলে দেখবেন যে মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকারের একই ধারাবাহিকতায় আজকে এই সরকার চলছে।
খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও জিয়া পরিবারের সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, জিয়া পরিবার ছাড়া বাংলাদেশে বিএনপির রাজনীতির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। সুতরাং এই পরিবারকে আমাদের লালন করতে হবে।’
লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আলোচনায় যুক্ত ছিলেন। আলোচনায় আরও অংশ নেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।