খালেদা জিয়া হয়তো নিজেকে সুস্থ মনে করছেন

মাহবুব উল আলম হানিফ। প্রথম আলো ফাইল ছবি
মাহবুব উল আলম হানিফ। প্রথম আলো ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, খালেদা জিয়া হয়তো নিজেকে সুস্থ মনে করছেন। সেই কারণে চিকিৎসা নিতে অনীহা প্রকাশ করতে পারেন।

আজ রোববার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মাহবুব উল আলম হানিফ এ কথা বলেন।

মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ সব প্রস্তুতি শেষ করেছিল আজ। তবে সেখানে যাননি খালেদা জিয়া। কারা কর্তৃপক্ষ বলেছে, হাসপাতালে যাওয়ার ব্যাপারে বিএনপির চেয়ারপারসন অনাগ্রহ দেখিয়েছেন।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘খালেদা জিয়া যদি নিজেকে অসুস্থ বোধ না করেন, তাহলে তো চিকিৎসা নিতে অনীহা প্রকাশ করবেন? আমি যদি সুস্থ মানুষ থাকি, আমাকে কেউ জোর করে চিকিৎসা দিতে চাইলে আমি কি নেব? আমি হয়তো অনীহা প্রকাশ করব।’ হানিফ বলেন, একজন দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদির সবকিছুর দায়ভার কারা কর্তৃপক্ষের। কোনো কয়েদি অসুস্থ হলে কারাবিধি অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ তাঁর চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকে। খালেদা জিয়াকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে পদক্ষেপ নিয়েছে। তারই একটি অংশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান তাঁকে সেখানে নিয়ে এসেছে। এরপর আর চিকিৎসার ব্যাপার নিয়ে কারও কোনো অভিযোগ থাকার কথা নয়।

সিইসির বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হয়তো নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যই ইভিএম পদ্ধতির ব্যবহার যৌক্তিক বলে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। সেটা নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সিইসির বক্তব্যের একটা খণ্ডিত অংশ নিয়ে এই ধরনের অহেতুক বিতর্ক করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। তিনি আরও বলেন, ‘সিইসির বক্তব্যটা সঠিকভাবে উত্থাপন হয়েছে কি না, আমরা জানি না। একটি খণ্ডিত অংশ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমাদের দেশে প্রতিটি নির্বাচনের পরই পরাজিত দল এবং পরাজিত প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ করেন। তাই ইভিএম পদ্ধতি যদি ব্যবহার করা যায়, তাহলে কিন্তু আর ব্যালটের সংশ্লিষ্টতা থাকে না। ব্যালট নিয়ে প্রার্থী বা দলের যে অভিযোগ, সেটা নিয়ে অভিযোগ করার যৌক্তিকতা থাকে না।’

কিছু উপজেলায় স্থানীয় সাংসদদের অবস্থানের কারণে ইসি ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছে। নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কি না? এ প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, সংসদ সদস্যরা তাঁদের আচরণবিধি লঙ্ঘন করে স্থানীয় নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওখানে উপস্থিত হওয়ার কারণেই নির্বাচন কমিশন কিছু এলাকার নির্বাচন স্থগিত করেছে। এটার মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন আবারও প্রমাণ করেছে, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য তারা বদ্ধ পরিকর। যেসব সাংসদ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অবশ্যই দলীয়ভাবে এটার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।