খালেদা জিয়াকে মানবিক কারণে বিদেশ যেতে দিন: ফখরুল

বক্তব্য দিচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার করোনা-পরবর্তী নানা জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় ‘মানবিক’ কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘করোনায় পোস্ট কোভিড জটিলতা হয়, সে জটিলতায় কিন্তু মাঝেমধ্যে টার্ন নেয় বিভিন্ন দিকে। ওনার (খালেদা জিয়া) যে বয়স, ওনার যে বিভিন্ন রোগ আছে, এর আগে উনি যে দুই বছরের বেশি কারাগারে ছিলেন, এখনো তিনি অন্তরীণই আছেন। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু জটিলতা হয়েছে।’

ফখরুল আরও বলেন, ‘সে জন্যই আমাদের দেশের প্রায় বেশির ভাগ মানুষের আকাঙ্ক্ষা আছে, ইচ্ছা আছে, তাঁর চিকিৎসাটা উন্নত কোনো হাসপাতালে হওয়া উচিত। বাংলাদেশে উন্নত হাসপাতালেই তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন। আরও উন্নত বিদেশে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব কি না। আপনারা জানেন, গতকাল তাঁর পরিবার থেকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য যে অনুমতি দরকার, সেই অনুমতি চাওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, সরকার মানবিক কারণে তাঁর বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে এবং এই দেশের ১৮ কোটি মানুষের সবচেয়ে প্রিয় নেতার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবে।’

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা জানেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২৭ তারিখ থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। তাঁকে এখানে সর্বপ্রকার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং আমাদের চিকিৎসকেরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে তাঁর চিকিৎসা করছেন। বাংলাদেশের মানুষ তাদের নেতাকে সুস্থ দেখতে চায়।’

কর্মসূচি
খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় আগামীকাল শুক্রবার বাদ জুম্মা সারা দেশে মসজিদে দোয়া মাহফিল ও বিভিন্ন উপাসনালয়ে প্রার্থনা সভার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘কাল শুক্রবার পবিত্র জুমাতুল বিদা। সারা দেশে সমস্ত মসজিদ, বিভিন্ন প্রার্থনালয় যেগুলো আছে অন্যান্য ধর্মের, সেগুলোয় আমাদের সমস্ত ইউনিট খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তির জন্য দোয়া অনুষ্ঠান করবেন, প্রার্থনা সভা করবেন।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা এবং ভ্যাকসিন সংগ্রহ নিয়ে সরকারের ‘দুর্নীতি’র কঠোর সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির উদ্যোগে সারা দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে নিহত দলীয় নেতা-কর্মীদের পরিবারকে দলের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার প্রদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে মহানগর বিএনপির ১০ জন নেতা-কর্মীর পরিবারকে ঈদের উপহার তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত সারা দেশে ৪২৫ জন নেতা-কর্মী মারা গেছেন বলে জানানো হয় অনুষ্ঠানে।

কেন্দ্রীয় দপ্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বক্তব্য দেন।


অনুষ্ঠানে বিএনপির হাবিব উন নবী খান সোহেল, মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, যুবদলের এসএম জাহাঙ্গীর, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উদ্‌যাপন উপকমিটির নেতা আতিকুর রহমান রুমন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।