গাইবান্ধা-৩: কে ধরছেন নৌকার হাল?

উম্মে কুলসুম, মাজেদার রহমান, মোকছেদ চৌধুরী ও সাহারিয়া খান
উম্মে কুলসুম, মাজেদার রহমান, মোকছেদ চৌধুরী ও সাহারিয়া খান

গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর) আসনের বিভিন্ন হাটবাজারে সাঁটানো রংবেরঙের ব্যানার-পোস্টার। কোনোটাতে হাসিমুখে জানানো হয়েছে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা। কোনোটাতে হাত নেড়ে দেওয়া ‘পোজ’। পোস্টারে লেখা, প্রার্থী করার দাবি। চায়ের দোকানগুলোতেও নানা আলোচনা, গুঞ্জন। বিষয়—আসন্ন উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন কে?

এই আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ ইউনুস আলী সরকার গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকায় মারা যান। এ কারণে আসনটি শূন্য হয়ে পড়েছে। এখনো উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। তবে এরই মধ্যে অন্তত ১০ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী এলাকায় ব্যানার-পোস্টার ছাপিয়ে গণসংযোগ করছেন।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, উপনির্বাচনে নৌকার হাল কে ধরছেন, তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সমর্থকেরা প্রচারণার ঝড় তুলেছেন। উপনির্বাচন ঘিরে এলাকার বাইরে অবস্থান করা অনেক নেতা এখন ঘন ঘন এলাকায় আসছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে এলাকায় গণসংযোগের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতাদের মনোযোগ আকর্ষণে শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ। তবে অন্য দলের তৎপরতা এখনো খুব একটা দৃশ্যমান নয়।

গাইবান্ধা-৩ আসন পলাশবাড়ী ও সাদুল্যাপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ পর্যন্ত উপনির্বাচনে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে অন্তত ১০ জন ব্যানার-পোস্টার ছাপিয়ে বিভিন্ন স্থানে টাঙিয়েছেন। এর মধ্যে ব্যবসায়ী গোপাল চন্দ্র দলীয় মনোনয়ন চেয়ে গত রোববার গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

ওই দশ সম্ভাব্য প্রার্থী হলেন সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহারিয়া খান, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক সাংসদ উম্মে কুলসুম, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মাজেদার রহমান, পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বকর প্রধান, সাধারণ সম্পাদক শামিকুল ইসলাম, একই কমিটির সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম মোকছেদ চৌধুরী, প্রয়াত ইউনুস আলীর ছেলে ফয়সাল ইউনুস, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হক, চিকিৎসক শাহ মো. ইয়াকুব-উল-আজাদ ও গোপাল চন্দ্র।

মোকছেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি অতিথি প্রার্থী নই। এলাকায় থেকে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছি। আসন্ন উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেলে আসনটি নেত্রীকে উপহার দিতে পারব।’

সাহারিয়া খান বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে দলকে সংগঠিত করেছি। জনগণ আমাকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করেছেন। আগামী উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলে বিজয় শতভাগ নিশ্চিত।’

মাজেদার রহমান বলেন, ‘পলাশবাড়ীর মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। সে সময় নিজের ও আশপাশের অনেক ইউনিয়নের উন্নয়ন করেছি। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে দুই উপজেলার মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা ও রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করেছি। উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেলে জয়ী হব।’

উম্মে কুলসুম গতকাল বুধবার মুঠোফোনে বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার উন্নয়নে কাজ করছেন। তৃণমূল পর্যায়ে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দল করছেন। সাধারণ মানুষ চায়, তিনি এই আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হোন। তাহলে এখানকার মানুষের উন্নয়নে তিনি কাজ করতে পারবেন। তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদী।

জানতে চাইলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, আসন শূন্য ঘোষণা হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন হবে।