গাছের ফাঁক থেকে গুলি হওয়ার আশঙ্কায় গাছ কেটেছিলেন জিয়া: তথ্যমন্ত্রী

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের রমনা কালীমন্দিরসংলগ্ন অংশে ফলদ, বনজ ও ঔষধি, তিন ধরনের একটি করে বৃক্ষের চারা রোপণ করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী
ছবি: তথ্য মন্ত্রণালয়

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হাজার হাজার বৃক্ষও ধ্বংস করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করার জন্য শুধু সেনাবাহিনীর কয়েক হাজার অফিসার ও জওয়ানকেই হত্যা করেছেন তা নয়, ঢাকা শহরের হাজার হাজার গাছও কেটে ফেলেছেন।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক উপকমিটির উদ্যোগে চার মাসব্যাপী চারা রোপণ ও পরিচর্যা কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এসব বলেন। বন ও পরিবেশ উপকমিটির অন্যতম উপদেষ্টা খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে দেশে একটি অদ্ভুত ধরনের তন্ত্র চালু করেছিলেন, সেটা হচ্ছে কারফিউতন্ত্র। যাঁদের বয়স ৫০–এর ওপরে, তাঁদের মনে থাকবে, জিয়াউর রহমানের সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম শহরে বছরের পর বছর রাতের বেলা কারফিউ ছিল। তিনি ঢাকা শহরে রাস্তার দুই ধারের গাছপালা সব কেটে ফেলেছিলেন। জিয়াকে কেউ একজন বলেছিল যে গাছের ফাঁক থেকে আপনাকে গুলি করতে পারে। এ কারণে ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করতে সব গাছ কেটে ফেললেন। আবার আমরা দেখলাম, হেফাজতের আন্দোলনের সময় বিএনপি-জামায়াত মিলে ঢাকা শহরের সব গাছ কেটে ফেলেছে। পরিবেশ-প্রকৃতি নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের বেশির ভাগকে তখন চুপ থাকতে দেখেছি, যেটি অনভিপ্রেত।’

‘বিএনপি-জামায়াতের ক্ষমতার সময় দেশে বনভূমির পরিমাণ ৮ শতাংশে নেমে এসেছিল, আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে গত সাড়ে ১২ বছরে বৃক্ষ আচ্ছাদিত জমির পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, একই সঙ্গে বনভূমির পরিমাণও ১২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে’ জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃক্ষরোপণ-বৃক্ষসৃজনকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করেছেন। আমরা একটি করে বনজ, ভেষজ এবং ঔষধি, তিন ধরনের গাছ লাগিয়ে এই আন্দোলনকে আরও বেগবান করব।’

আওয়ামী লীগের প্রথম বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং পরে বন ও পরিবেশমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ঘোড়দৌড়ের এই ময়দানে বৃক্ষশোভিত উদ্যান গড়ে তুলেছিলেন, তারপর এটিকে আরও গাছপালায় সুশোভিত করেছেন আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে লোকালয়ে রাস্তার ধারে শুধু বন সৃজন করা হয়েছে তা নয়, সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে নিঃস্ব মানুষেরা সেই গাছের মালিকানা পেয়েছে এবং নির্দিষ্ট সময়ে সেই গাছ বিক্রি করে অনেকে ১০ থেকে ২৫ লাখ টাকাও পেয়েছেন। যেটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিবছর বিতরণ করেন। বন বিভাগের মাধ্যমেও বিতরণ করা হয়।’

সভা শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের রমনা কালীমন্দিরসংলগ্ন অংশে ফলদ, বনজ ও ঔষধি, তিন ধরনের একটি করে বৃক্ষের চারা রোপণ করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।

নাসিমের বড় গুণ ছিল কট্টর বিরোধীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক

এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত স্মরণসভায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মোহাম্মদ নাসিমের মতো একজন নেতার হঠাৎ চলে যাওয়া শুধু আমাদের দলের জন্যই নয়, পুরো রাজনীতি অঙ্গনের জন্যই অপূরণীয় ক্ষতি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নাসিম ভাইয়ের অন্যতম বড় গুণ ছিল তিনি একেবারে কট্টর বিরোধীদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রাখতেন। কিন্তু তাঁদের ভুল বক্তব্যের প্রতিবাদ করতে দ্বিধা করতেন না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও রাজনীতির সময় কট্টর বিরোধীদের সঙ্গেও শুধু সুসম্পর্ক নয়, অনেক সময় তাদের দেখভালও করছেন। মোহাম্মদ নাসিম ভাই সেই কাজটি করতেন। আমরা তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি এবং তাঁর ছেলে তানভীর শাকিল জয় যেন আরও বড় নেতা হয়, সে প্রার্থনা করি।’