গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তার ও তল্লাশির অভিযোগ বিএনপির শাহাদাতের

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন
ছবি: জুয়েল শীল

দলীয় নেতা–কর্মীদের গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তার ও ঘরে ঘরে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে নগরের নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

আগামী বুধবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘সন্ত্রাসী, মাস্তান, চাঁদাবাজ, ইয়াবা ব্যবসায়ী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতি উৎসাহী কিছু সদস্যের কারণে সিটি নির্বাচনের পরিবেশ পরিবেশে ধ্বংস হয়ে গেছে। নির্বাচনের বাকি আর মাত্র এক দিন। সাত দিন ধরে পুলিশ নেতা-কর্মীদের ঘরে থাকতে দিচ্ছে না। ঘরে ঘরে গিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে। যাদের পাচ্ছে না, তাদের পরিরাকে হুমকি দিয়ে আসছে, যাতে এলাকা ছেড়ে চলে যায়।’

শাহাদাত দাবি করেন, ইতিমধ্যে ৪০ নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা করেছে সাতটি। গায়েবি, সাজানো এসব মামলায় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গতকাল রোববার রাতেই ধরেছে ২০ জনকে। নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিমকে গতকাল দিবাগত রাত দেড়টায় চকবাজার থানার পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। পরে তাঁকে ছাড়িয়ে আনা হয়। ওই নেতাকে পুলিশ লুঙ্গি পর্যন্ত পরতে দেয়নি। বাকলিয়ায় মুন্নী নামের এক কর্মীকে ছোট শিশুসহ গ্রেপ্তার করেছে।

জানতে চাইলে নগর পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ অহেতুক কাউকে হয়রানি করছে না। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে দলমত-নির্বিশেষে যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, তাদের ধরছে।

চকবাজার থানায় বিএনপির এক নেতাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি ছিল। একজনকে ধরতে গিয়ে আরেকজনকে ধরেছে। পরে তাকে সসম্মানে ছেড়ে দেওয়া হয়।

শাহাদাত হোসেন বলেন, অবিলম্বে গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এ জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করা হচ্ছে। তাদের সময় দেওয়া হবে। ওই সময়ের মধ্যে নেতা-কর্মীদের মুক্তি দেওয়া না হলে নির্বাচন কমিশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।

ভোটের দিনের প্রসঙ্গ টেনে শাহাদাত হোসেন বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া যেন কেউ ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না পারে। এজেন্টদের সুরক্ষা দিতে হবে। বহিরাগতরা যাতে ভোটকেন্দ্রে আসতে না পারে। আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে শাহাদাত বলেন, ‘তাঁরা নোয়াখালী, বান্দরবান, ফেনী, সাতকানিয়াবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন নৌকার প্রার্থীর পক্ষে। ওই সময় তাঁরা কেন্দ্র পাহারা দেবেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর জানতে পারি। অথচ বিএনপি মতবিনিময় করেছে। বাইরের কারও সঙ্গে নয়, নগরে থাকা বিভিন্ন পেশাজীবীর সঙ্গে।’

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গত বছরের মার্চ থেকে করোনাকালে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছেন জানিয়ে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রের প্রতি মানুষের যে অনীহা ছিল, তা কিছুটা দূর হয়েছে। মানুষকে বলেছি ভোটকেন্দ্রে আসেন। শুরুতে নির্বাচনের উৎসবমুখর পরিবেশ থাকলেও এখন সেটি নষ্ট হয়ে গেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, নগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম বক্কর, নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, ইয়াছিন চৌধুরী, উত্তর জেলা বিএনপি নেতা চাকসু ভিপি নাজিম উদ্দিন।