চট্টগ্রাম নগরে বিতর্কে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব

ছাত্রলীগ
ছাত্রলীগ

প্রায় ৩১ বছর পরে চট্টগ্রাম নগরে ছাত্রলীগের থানা কমিটি গঠন করতে গিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছে নগর ছাত্রলীগের নেতৃত্ব। নগরের ডবলমুরিং থানায় একজন ‘অস্ত্রধারী’কে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। একইভাবে চান্দগাঁও থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছাত্রদল নেতার ভাই হয়েছেন বলে এক পক্ষের অভিযোগ। এ অবস্থায় সংগঠনের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ।

ছাত্রলীগের দুটি থানার কমিটি ঘোষণার পর একাংশ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। গতকাল শনিবার বিকেলেও নগরের দেওয়ানহাট মোড়ে বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগের ক্ষুব্ধ অংশটি। আগের দিন শুক্রবার একই জায়গায় তাঁরা বিক্ষোভের পর রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেছিলেন। গতকাল সড়ক অবরোধ না করলেও নগর ছাত্রলীগের সভাপতির কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। গতকালের বিক্ষোভ আধা ঘণ্টা স্থায়ী ছিল।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, অস্ত্রধারী, মাদক ব্যবসায়ী এবং ‘বিএনপি ঘরানা’র কিছু তরুণকে চান্দগাঁও ও ডবলমুরিং থানার নেতৃত্বে আনা হয়েছে। কমিটি গঠনের আগে কারও সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি বলে এ অংশের অভিযোগ। বিশেষ করে ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এমন একজনকে করা হয়েছে, যিনি ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড উপনির্বাচনের সময় অস্ত্র হাতে মহড়া দেন।

চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানায় নুরুন নবী শাহেদকে সভাপতি ও মো. শহীদুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক এবং ডবলমুরিং থানায় ফরহাদ সায়েমকে সভাপতি ও রাকিব হায়দারকে সাধারণ সম্পাদক করে গত বৃহস্পতিবার রাতে কমিটি ঘোষণা করে নগর ছাত্রলীগ। নতুন কমিটির বিরুদ্ধে শুক্রবার বিকেলে নগরের শেখ মুজিব রোডে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি কমিটিতে জায়গা পেলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু টায়ার জ্বালিয়ে এবং সড়ক অবরোধ করে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলা ছাত্রলীগের আদর্শ পরিপন্থী কাজ। কমিটিতে অস্ত্রধারী কেউ জায়গা পেলে গণতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলন করা যেতে পারে।

অস্ত্রের ছবি ‘ফটোশপে এডিট’ করা বলে রাকিব হায়দারের দাবি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘২৩ মাস আগে কে বা কারা অস্ত্রের ছবি এডিট করে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনার সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই।’

চান্দগাঁও থানার নতুন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসানের অভিযোগ, ‘যিনি সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন, তাঁর ভাই তৌহিদুল আলম হাজেরা তজু কলেজ শাখা ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। অস্ত্রধারী ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের দিয়ে কমিটি হলে আন্দোলন হওয়া স্বাভাবিক।’

কামরুলের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন চান্দগাঁও থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল আলম।