চসিকে বিএনপির প্রচারের দুটি গাড়ি ভাঙচুর, মারধর

সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচার চালানো হচ্ছিল। এ সময় গাড়ি দুটি ভাঙচুর করা হয়। আজ সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় নাসিমন ভবনের সামনে
ছবি: সৌরভ দাশ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে বিএনপির প্রচারে ব্যবহৃত দুটো অটোরিকশা ভাঙচুর ও আরোহীদের মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার বিকেলে ষোলশহর মেয়র গলির সামনে গাড়ি দুটি ভাঙচুর করা হয়। ঘটনার সময় বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এ ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছে বিএনপি। ভাঙচুর করা দুটি অটোরিকশার একটি থেকে শাহাদাতের ধানের শীষ প্রতীকের জন্য ভোট চাওয়া হচ্ছিল। অপরটি ছিল সংরক্ষিত-৩ নম্বর ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থী জিন্নাতুন নেছারের প্রচারের গাড়ি। জিন্নাত বিএনপি–সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী। সন্ধ্যায় বিএনপির পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করে বিষয়টি জানানো হয়।  

ভাঙচুরের সময় অটোরিকশায় থাকা জিন্নাতের ছেলে সাইমন ইব্রাহিম ও শব্দযন্ত্রের (মাইক) দায়িত্বরত কর্মচারী জয়নাল আবেদিনকে মারধর করা হয়। একইভাবে ধানের শীষের প্রচারে থাকা সিএনজিচালিত অটোরিকশার এক আরোহীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁরা সামান্য আহত হয়েছেন।

ভাঙচুর করা অটোরিকশা দুটিসহ আহতদের নিয়ে জিন্নাতুন নেছা বিকেল পাঁচটার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হন। এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মাদ হাসানুজ্জামান কক্ষ থেকে বের হয়ে এসে তাঁদের কাছে ঘটনার বর্ণনা শোনেন।

জিন্নাতুন নেছা বলেন, বেলা সাড়ে তিনটায় শাহাদাত হোসেন ২ নম্বর গেট ও কসমোপলিটন এলাকায় প্রচারে যান। এ সময় তিনিও শাহাদাতের সঙ্গে ছিলেন। গণসংযোগ করতে করতে তাঁরা সামনের দিকে অগ্রসর হন। পেছনে ছিল প্রচারে নিয়োজিত মাইকসহ গাড়িগুলো। একপর্যায়ে পেছন থেকে দা এবং লাঠি নিয়ে দুটি সিএনজি অটোরিকশায় হামলা করা হয়। তাঁর ছেলেসহ আরোহীদের মারধর করা হয়। আওয়ামী লীগই এই হামলা করেছে বলে জিন্নাতুনের অভিযোগ।

নগর পুলিশের পাঁচলাইশ অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (এসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, বিএনপি ওই এলাকায় নির্বাচনী প্রচার করবে, তা তাদের আগে থেকে জানায়নি। দুটি মিছিল মুখোমুখি হলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় শাহাদাত উপস্থিত থাকলেও রেজাউল (আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী) ছিলেন না। পরে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিকেলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের নিচে ভাঙা গাড়ি দুটি রাখা ছিল। শাহাদাতের প্রচারে নিয়োজিত অটোরিকশাটির (চট্ট মেট্রো-থ-১৩-১৩৫৯) সামনের কাচ ভেঙে চুরমার করা হয়। ওপরে বাঁধা মাইকটিও ভেঙে ফেলা হয়। জিন্নাতের গ্লাস প্রতীকের প্রচারে থাকা অটোরিকশাটির (চট্ট মেট্রো-থ-১২-১৮০৮) সামনের কাচ পুরোপুরি ভেঙে পড়ে গেছে। পেছনের কাভারও ছিঁড়ে ফেলা হয়।

এ ব্যাপারে শাহাদাত ও জিন্নাত পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়েছেন। হামলার জন্য দুই প্রার্থীই আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুটি অভিযোগ দিয়ে গেছেন। দুটি সিএনজি অটোরিকশা ভাঙা হয়েছে। আমি তাদের থানায় ডায়েরি করার পরামর্শ দিয়েছি। আমার দিক থেকে আমিও ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

নগর যুবলীগের সদস্য মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘ষোলশহর এলাকায় নৌকার সমর্থনে আমাদের একটা গণসংযোগ ছিল। এ সময় বিএনপির প্রচার চলছিল। তাদের মিছিল থেকে এলাকায় রেজাউলের পোস্টার ছেঁড়া হয়। পরে পোস্টার ছেঁড়া নিয়ে নিজেরাই অন্তঃকোন্দলে জড়ায়। অন্তঃকোন্দলের কারণে তাদের গাড়ি ভাঙচুর হয়। আওয়ামী যুবলীগ এই হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। মেয়র গলিতে তারা ঘটনা ঘটিয়ে একটা অপবাদ দিতে চেয়েছে।’

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসার গলিটি মেয়র গলি নামে পরিচিত।