জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ১৪ দলের

শান্তি সমাবেশে ১৪ দলের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত
শান্তি সমাবেশে ১৪ দলের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

দলমত–নির্বিশেষে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, জঙ্গিদের কোনো ধর্ম নেই। মুক্তিযুদ্ধে যেমনভাবে যুদ্ধ করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা, তেমনিভাবে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তি, জঙ্গিবাদী শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করতে, মানবতার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোট আয়োজিত ‘শান্তি সমাবেশ’ থেকে এ কথা বলেন দলটির নেতারা।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিএনপির সাংসদদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে আমাদের একটাই আওয়াজ, একটাই স্লোগান—শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ডসহ এসব জঘন্য সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে দাঁড়াতে হবে। এদের কোনো ধর্ম নেই, বর্ণ নেই, দেশ নেই, দল নেই।’

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আমরা খুশি হয়েছি, ধন্যবাদ জানাই বিএনপির বন্ধুদের। অনেক দেরিতে হলেও তাঁরা সংসদে শপথ নিয়ে যোগদান করেছেন। আমরা আহ্বান করব, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আপনারাও এগিয়ে আসুন। তাঁর হাতকে শক্তিশালী করুন, সমর্থন করুন।’ তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার এই লড়াইয়ে আপনারাও এগিয়ে আসুন। আপনাদের ব্যর্থতাকে কাটিয়ে উঠে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে এই অভিযাত্রায় অংশগ্রহণ করুন।’

শান্তি সমাবেশে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘জাত-ধর্ম সব ভুলে গিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে যেমনভাবে যুদ্ধ করেছিলাম, তেমনিভাবে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তি, জঙ্গিবাদী শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জঙ্গিবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, রাজনৈতিকভাবে যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, তাদের প্রতিহত করতে হবে। এখনো ধর্মের মুখোশধারীরা, হিন্দু ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, নারীদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, জঙ্গি সন্ত্রাসীদের উসকানি দিচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে রাজনৈতিকভাবে আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা দরকার।’

সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘সিদ্ধান্ত হচ্ছে গণতন্ত্রের মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষা থাকবে, কিন্তু তেঁতুল তত্ত্ব থাকবে না। বিভিন্ন ধর্মের উপাসনালয় থাকবে, মসজিদ-মন্দির থাকবে, কিন্তু সাম্প্রদায়িক তৎপরতা থাকতে পারবে না। এটা একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হলে আমরা মুখোশধারীদের এক চুলও ছাড় দেব না। এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্ম সভার নামে বিভিন্ন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে আমাদের দেশে আইন আছে, এই আইন অন্য সব ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়, কিন্তু এ ক্ষেত্রে ব্যবহার হয় না। ওয়াজে নানা কথা বলা হয়, যা মোবাইল খুললেই দেখা যায়। জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করতে, মানবতার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংসদ শফিকুর রহমান, লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুরসহ ১৪ দলের নেতারা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।