জন আকাঙ্ক্ষার কর্মশালায় দিলারা চৌধুরী, জামায়াত ছেড়ে যোগ দিলেন এরশাদ হোসেন

আজ শুক্রবার কক্সবাজারে জন আকাঙ্ক্ষার কর্মশালায় বক্তব্য দেন অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী। ছবি: সৌজন্য ছবি
আজ শুক্রবার কক্সবাজারে জন আকাঙ্ক্ষার কর্মশালায় বক্তব্য দেন অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী। ছবি: সৌজন্য ছবি

জামায়াত-শিবির ছেড়ে দেওয়া নেতা-কর্মীদের নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগ জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশের কর্মশালায় বক্তব্য দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক প্রধান ড. দিলারা চৌধুরী। আজ শুক্রবার সকালে কক্সবাজারের হোটেল কোস্টাল পিস মিলনায়তনে তিনি সংগঠনটির রাজনৈতিক কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন।

জন আকাঙ্ক্ষার নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দিলারা চৌধুরী বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দেশে বংশানুক্রমিক রাজনীতি চালু করেছে। এই দলগুলোতে গণতন্ত্র নেই। দেশকে রক্ষা করতে হলে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। যদিও তরুণদের চিন্তা ও চরিত্র ধ্বংস করতে রাজনৈতিক দলগুলোই দায়ী। তিনি জন আকাঙ্ক্ষাকে নিজেদের মধ্যে গঠনমূলক সমালোচনা চালু করার পরামর্শ দেন।

কর্মশালায় সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, গলাবাজি ও পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি আর নয়। কথা কাজের মিল রাখার শপথে বলীয়ান হতে হবে।

দুই দিনের এই কর্মশালায় জামায়াতে ইসলামী থেকে জন আকাঙ্ক্ষায় যোগ দেন উত্তরবঙ্গে দলটির অন্যতম সংগঠন আবু হেনা এরশাদ হোসেন। তিনি লালমনিরহাট-১ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে ২০০১,২০০৮ ও ২০১৮ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ সময় আবু হেনা এরশাদ হোসেন জামায়াত থেকে পদত্যাগ করে জন আকাঙ্ক্ষায় যুক্ত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ধর্ম ও মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবসার পণ্য বানানো খুবই দুঃখজনক। অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতিই হলো প্রকৃত বাংলাদেশ গঠনের সহায়ক।

জামায়াত ছাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আবু হেনা এরশাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জামায়াত রক্ষণশীল একটি দল। সেখানে কথা বলার এবং কাজ করার স্বাধীনতা নেই। যেমন: মুক্তিযুদ্ধের সময় লালমনিরহাটের পাটগ্রামে আমাদের তিন শত বিঘা জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের ৬ নম্বর সেক্টর কমান্ড প্রতিষ্ঠিত হয়। আমি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি। আমি আমার দেখা ৬ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি বই লিখছি। কিন্তু আমাকে বলা হয় এখন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা যাবে না। এ ধরনের অনেক বিষয় আছে, যা নিয়ে আমার ভেতরে খটকা তৈরি হয়।’

জামায়াতে ইসলামী থেকে জন আকাঙ্ক্ষায় যোগ দেন আবু হেনা এরশাদ হোসেন। ছবি: সৌজন্য ছবি
জামায়াতে ইসলামী থেকে জন আকাঙ্ক্ষায় যোগ দেন আবু হেনা এরশাদ হোসেন। ছবি: সৌজন্য ছবি

জন আকাঙ্ক্ষার সংগঠক ও আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে সাম্য মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করার রাজনীতিকে মূল ধারার রাজনীতি হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।

জন আকাঙ্ক্ষার সমন্বয়ক মজিবুর রহমান বলেন, ‘অনেক উপহাস ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে এগোতে হচ্ছে আমাদের। কক্সবাজারের কর্মশালা আমাদের জন্য একটি মাইলফলক। এখান থেকেই আমাদের সংগঠিত হওয়ার পথ সূচিত হলো।’

কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা রবীন্দ্র বিজয় বড়ুয়া, আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম, রাজনীতিক আনিসুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ পাটওয়ারী প্রমুখ।