টিএসসিতে ছাত্রদলের এক নেতাকে অন্য পক্ষের মারধরের অভিযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি)
ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এক নেতাকে সংগঠনেরই অন্য পক্ষের তিন নেতা মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারী নেতা বলছেন, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে মারধর করা হয়েছে৷ তবে অভিযুক্তদের দাবি, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি, সেখানে কথা-কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়েছে এবং শিগগিরই এর ‘সমাধান’ হয়ে যাবে৷

আজ মঙ্গলবার দুপুরে টিএসসিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করা হয়। মারধরের শিকার হওয়ার অভিযোগ করা মাহফুজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। আর অভিযুক্ত তিনজন হলেন ওই হলের শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ওমর ফারুক ওরফে মামুন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ইমাম আল নাসের ওরফে মিশুক ও মাস্টারদা সূর্য সেন হল শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু হান্নান তালুকদার।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, একটি মামলায় গ্রেপ্তার থাকা সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে আজ দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের হল কমিটিগুলোর নেতারা ক্যাম্পাসে একটি মিছিল করেন। টিএসসি থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি ক্যাম্পাসের শিববাড়ী মোড় ঘুরে আবার টিএসসিতে এসে শেষ হয়। এরপর রাকিবুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে টিএসসির দেয়ালে পোস্টার সাঁটাচ্ছিলেন ছাত্রদল নেতা-কর্মীরা। এরই একপর্যায়ে আগের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের সূত্র ধরে মাহফুজের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি করেন হান্নান। পরে মাহফুজকে কিল-ঘুষি মারেন ওমর ফারুক, ইমাম আল নাসের ও আবু হান্নান।

টিএসসিতে উপস্থিত থাকা ছাত্রদলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা সেখানে গিয়ে মারধর থেকে তিনজনকে নিবৃত্ত করেন ও মাহফুজকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেন।

অভিযোগকারী মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওমর ফারুক, ইমাম আল নাসের ও আবু হান্নান তালুকদার আমাকে পরিকল্পিকভাবে মারধর করেছেন। তাঁরা বারবার ফোন করে আমার টিএসসি আসা নিশ্চিত করেন। পরে আগের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের সূত্র ধরে তাঁরা আমাকে ব্যাপক কিল-ঘুষি মারেন।’

জানতে চাইলে মারধরে অভিযুক্ত তিনজনের একজন ইমাম আল নাসের প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তাঁরা মাহফুজকে কোনো মারধর করেননি। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের সূত্র ধরে কথা-কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। এটি তেমন বড় কোনো ঘটনা নয়। শিগগিরই এর ‘সমাধানও’ হয়ে যাবে। জ্যেষ্ঠ নেতারা হয়তো দুই পক্ষকে মিলিয়ে দেবেন।

এ ঘটনার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব আমানউল্লাহ আমান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগকারী ও অভিযুক্তরা সবাই একই সার্কেলের। তাঁরা একসঙ্গেই চলাফেরা করেন। আগের একটি দ্বন্দ্বের সূত্র ধরে তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়েছিল।

১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর কাঁটাবন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম। দুই দিনের রিমান্ড শেষে রাকিব এখন কারাগারে আছেন। কিন্তু ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দলের’ কারণে রাকিবুলের গ্রেপ্তারের প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও রাকিবের জায়গায় এখনো কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ সংগঠনেরই কয়েকটি পক্ষের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলে বর্তমানে অন্তত ছয়টি পক্ষ রয়েছে। পক্ষগুলোর স্বার্থের দ্বন্দ্ব মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্যে আসছে। ফলে সংগঠনটির এই ইউনিটে একধরনের সাংগঠনিক অচলাবস্থা বিরাজ করছে।