ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় আগেভাগেই নির্বাচনী আমেজ

বর্তমান মেয়রের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। এরই মধ্যে নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়ে গেছে।

মনোনয়নপ্রত্যাশীরা পোস্টার-ব্যানার দিয়ে নিজেদের তুলে ধরছেন। গতকাল ঠাকুরগাঁও শহরের পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায়।
ছবি: প্রথম আলো

ঠাকুরগাঁও পৌরসভার বর্তমান মেয়রের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু এরই মধ্যে পৌরসভায় নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন সামনে রেখে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নেতারা সরব হয়ে উঠেছেন। তাঁরা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করে সড়ক, বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে পোস্টার-ব্যানার, ফেস্টুন সেঁটে দিতে শুরু করেছেন। এ ছাড়া তাঁরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পৌর এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তবে তুলনামূলকভাবে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নীরব।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের অন্তত ১৩ জন নেতা মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন। জেলা ছাত্রলীগের
সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ স ম গোলাম ফারুক ওরফে রুবেল মেয়র পদে মনোনয়ন পেতে ফেসবুকে সরব রয়েছেন। তিনি উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের আশ্বাসের পাশাপাশি পৌরবাসীর দোয়া চেয়ে নিজ ও দলের নেতাদের ছবি দিয়ে পোস্টার ও বোর্ড টাঙিয়েছেন।

জেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুল মজিদ ওরফে আপেল মেয়র পদে নিজের সম্ভাব্য প্রার্থিতার বিষয়টি জানান দিতে পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়েছেন। এর পাশাপাশি তিনি গণসংযোগ করছেন। উঠান বৈঠক করে পৌরসভার উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে রিপন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য বাবলু রহমান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান সরকার শহরে প্রচারণা বোর্ড, ফেস্টুন ও পোস্টার লাগিয়েছেন।

গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি তহমিনা আখতার মোল্লা, জেলা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকরামুল হক মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে গণসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক মেয়র এস এম এ মঈন, জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক বেলাল হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নাজমুল শাহ ওরফে অ্যাপোলো ও কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগ সদস্য আঞ্জুমান আরা মেয়র পদে মনোনয়ন চাইবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।

আ স ম গোলাম ফারুক বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় সমস্যার শেষ নেই। আমি পৌরবাসীর সেবা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করতে আগ্রহী। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাব না। দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে, তাঁর পক্ষে কাজ করব।’

আবদুল মজিদ জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দলের নেতা-কর্মীদের অনুরোধে মেয়র পদে মনোনয়ন চাইবেন। তিনি আশাবাদী, দল তাঁকে মূল্যায়ন করবে।

গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তহমিনা আখতার মোল্লা জানান, পৌরবাসী তাঁর পক্ষে থাকলেও স্থানীয় ষড়যন্ত্রের কাছে তিনি হেরেছেন। তাই পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরণে তিনি এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন।

এ সম্পর্কে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মু. সাদেক কুরাইশী বলেন, দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে আবেদন চাওয়া হবে। এরপর যাচাই-বাছাই করে স্থানীয় নির্বাচনী মনোনয়ন বোর্ডে পাঠানো হবে। মনোনয়ন বোর্ডই দলের প্রার্থী চূড়ান্ত করবে।

এদিকে, বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র মির্জা ফয়সল আমীন, সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, আল মামুন, সুলতানুল ফেরদৌস নম্র চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ও অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ। বর্তমান মেয়র মির্জা ফয়সল আমীন জানান, দলীয় মনোনয়ন পেলে তিনি নির্বাচনে আবারও প্রার্থী হবেন।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।