ড. কামাল ও ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে কাউন্সিলে: মন্টু

রাজধানীর বাংলামোটরে একটি রেস্তোরাঁয় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গণফোরামের একাংশের মতবিনিময় সভা
ছবি: প্রথম আলো

গণফোরামের একাংশের নেতা মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেছেন, ড. কামাল ও ঐক্যফ্রন্ট বিষয়ে কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হবে। দলের মতবিনিময় সভায় সভাপতি ড. কামাল হোসেন কেন নেই, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে তাঁরা থাকবেন কি না—এসব প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে দলটির সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক এমন কথা বলেন।

রাজধানীর বাংলামোটরে একটি রেস্তোরাঁয় আজ মঙ্গলবার দুপুরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে গণফোরামের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুলসহ কয়েকজন সাংবাদিক জানতে চান, ড. কামাল হোসেন সভায় কেন নেই, গণফোরামের এই অংশ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আছে কি না এবং গণফোরাম সেমিনারভিত্তিক দল হবে কি না...। সাংবাদিকদের এসব প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, ‘একটা রাজনৈতিক দলে সহকর্মীদের সঙ্গে মতবিরোধ হতে পারে। এ ছাড়া কামাল হোসেন অসুস্থ, কম বের হন। তিনি সম্মেলনের তারিখ পিছিয়ে দিতে বলেছিলেন, আমরা পিছিয়েছি। উনি আমাদের সঙ্গে থাকবেন কি থাকবেন না, তা আগামী সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হবে। দলে কোনো অন্তর্দ্বন্দ্ব চলছে না এবং অনৈক্যও নেই।’

ঐক্যফ্রন্ট প্রসঙ্গে মন্টু বলেন, এখন এই জোটের কার্যক্রম স্থগিত আছে। মাঠেও নেই। প্রয়োজনে জাতীয় ঐক্য হবে। তিনি আরও বলেন, ‘সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেব আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে থাকব, নাকি নতুনভাবে ঐক্যফ্রন্ট করব।’ আগামী ২৮ ও ২৯ মে গণফোরামের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি জানান।

গণফোরামের আরেক নেতা আবু সাইয়িদ বলেন, যে চেতনার ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, সেটা যারা ধারণ করে এবং বাস্তবায়ন করে, তারাই হতে পারে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনো দল নেই। বঙ্গবন্ধু পর্যন্তই আওয়ামী লীগে মানুষের রাজনীতির নীতি ছিল। এখনকার আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে।

মতবিনিময় সভায় লিখিত বক্তব্যে সুব্রত চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। একটি শক্তিশালী কুচক্র জনগণ, রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক দলের গলা টিপে ধরেছে। হত্যা, খুন, গুম হামলা-মামলা নিপীড়ন চলছে। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে গণমাধ্যম ও বাক্স্বাধীনতার ওপর খড়্গ ধরে রাখা হয়েছে। লিখিত বক্তব্যে দলটির পক্ষ থেকে এই আইন বাতিলের দাবি জানানো হয়।

২০১৯ সালের এপ্রিলে গণফোরামের কাউন্সিলের পর থেকেই দলটিতে অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। তখন মোস্তফা মহসীন মন্টুকে বাদ দিয়ে রেজা কিবরিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। দলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কারও চলে। মোস্তফা মহসীন মন্টুর নেতৃত্বে গণফোরামের একটি অংশ বিভিন্ন সভা করে আসছে। তাঁরা গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কামাল হোসেনকে বাদ দিয়ে একটি নির্বাহী কমিটিও গঠন করেন। এর মধ্যে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়াও দল ও পদ থেকে পদত্যাগ করেন।