তারেক রহমানকে ‘বিদেশি নাগরিক’ বললেন ওবায়দুল কাদের

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশি নাগরিক বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ও বিদেশি নাগরিক তারেক রহমান কীভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন—দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এই প্রশ্ন করেছেন তিনি।

আজ রোববার সকালে সচিবালয়ে নিজের দপ্তরে ব্রিফিংকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। তবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কোন দেশের নাগরিক, তিনি কখন অন্য দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন, তা বলেননি ওবায়দুল কাদের।

সচিবালয়ে ব্রিফিং হিসেবে বলা হলেও এতে সাংবাদিকদের উপস্থিতি ছিল না। বরাবরের মতোই বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাংবাদিকের উপস্থিতিতে নিজ দপ্তরে বসে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ওবায়দুল কাদের। পরে সেই বক্তব্যের ভিডিও ও লিখিত বার্তা গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে বেশির ভাগ সময় এভাবেই সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবন থেকে ব্রিফ করে আসছেন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ এই নেতা ও মন্ত্রী। মাঝেমধ্যে তিনি সচিবালয়ের দপ্তরেও ব্রিফ করে থাকেন। পরে অবশ্য সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে মন্ত্রীকে বৈঠক করতে দেখা যায় ভিডিওতে।

ওবায়দুল কাদের লিখিত ব্রিফিংয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের বিষয়ে বিএনপির অভিযোগের জবাব দেন। তিনি বলেন, ‘ধান ভানতে শিবের গীত’ গেয়ে চলেছেন বিএনপির নেতারা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘তারেক রহমানের মতো একজন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামির কত টাকা বিনিয়োগ করলে বিদেশি নাগরিকত্ব পাওয়া যায়? তারেক রহমান বিনিয়োগকৃত টাকা মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমেই বিদেশে পাচার করেছেন।’

বিএনপির নেতাদের গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জিয়াউর রহমান ‘হ্যাঁ’, ‘না’ ভোটের মাধ্যমে কোন গণতন্ত্র রক্ষা করেছিলেন? সে সময় জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান হিসেবে অবৈধভাবে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা, ১৯৭৭ সালে বিতর্কিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, ’৭৯ সালে সংসদ নির্বাচন, ’৮১ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেছেন। প্রতিটি নির্বাচনই ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।

মাগুরার নির্বাচনের কথা জনগণ এখনো ভুলে যায়নি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়ার ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন, ২০০৬ সালে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটারসহ নির্বাচনের প্রচেষ্টা কোন গণতন্ত্র? তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে বিএনপির সন্ত্রাস, ভোটকেন্দ্র দখল, প্রকাশ্যে সিল মারা, প্রতিপক্ষ নেতা-কর্মীদের হত্যা, ধর্ষণ, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্মম নির্যাতন, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া কি বিএনপির গণতন্ত্রের নমুনা? বিএনপি এ দেশের ইতিহাসে যে ঘৃণ্য নজির সৃষ্টি করেছে, দেশের মানুষ তা এখনো ভুলে যায়নি।

বিএনপির শেখানো তথাকথিত গণতন্ত্রের পথে এ দেশের মানুষ আর হাঁটতে চায় না বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যাদের শাসনামলে দেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের কলঙ্ক–তিলক পরেছিল এবং দলের গঠনতন্ত্র থেকে যে দল দুর্নীতিবিরোধী সাত ধারা বাতিল করে দুর্নীতিবাজদের দলে বিচরণের পথ উন্মুক্ত করে, তারাই আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দল। তারাই দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষক।