দেড় মাসের মাথায় বোল পাল্টালেন কাদের মির্জা

ঈদ পুনর্মিলনী ও মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন আবদুল কাদের মির্জা। আজ বিকেল চারটায় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌর মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

দল ছাড়ার ঘোষণার দেড় মাসের মাথায় বোল পাল্টে ফেলেছেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল কাদের মির্জা। দলেই থাকার ঘোষণা দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র।

আজ রোববার বিকেল চারটার দিকে বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী ও মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানে কাদের মির্জা এ ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে তাঁর অনুসারী কয়েক শ নেতা-কর্মী ও সমর্থক জড়ো হন।

কাদের মির্জা অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে আমাকে সিগন্যাল দেওয়া হয়েছে, আপনার পদত্যাগপত্র আমরা গ্রহণ করিনি। এ জন্য আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি আওয়ামী লীগে আছি, আওয়ামী লীগে থাকব। তবে একটা কথা বলি, আমি যে কথা বলেছিলাম, আমি কোনো পদ-পদবিতে থাকব না। আমি আওয়ামী লীগের একজন সদস্য হিসেবে কাজ করব। আর ভবিষ্যতে কোনো জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করব না। এটা থেকে আমাকে আর কেউ সরাতে পারবে না। আওয়ামী লীগ আমার প্রাণের সংগঠন।’

তিনি অপরাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না এবং অপরাজনীতির বিরুদ্ধে—অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন কাদের মির্জা। তিনি বলেন, ‘নোয়াখালী, ফেনী ও কোম্পানীগঞ্জের অপরাজনীতি ও অপরাজনীতিকদের বিরুদ্ধে আমার কোনো আন্দোলন নয়। আমার আন্দোলন হচ্ছে এটা পরিবর্তনের জন্য। এ দেশের গরিব শ্রেণির ওপর শোষণের যে রাজত্ব চলছে, সেই রাজত্ব থেকে গরিব মানুষকে উদ্ধার করে গরিব মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব। সে লক্ষ্যে আমি কাজ করে যাব আজীবন।’

কাদের মির্জা বলেন, ‘আর একটা কথা, আমি অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি করব। কারও বিরুদ্ধে আপনারা কথা বলবেন না। অপরাজনীতির হোতাদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে চাই না। আমি শুধু আজকে বলতে চাই যাঁরা দলকে ভালোবাসেন, দেশের প্রতি মমত্ববোধ আছে, আওয়ামী লীগের মূল স্রোতোধারা এস্কান্দার হায়দার বাবুল ও মো. ইউনুছের নেতৃত্বে যাঁরা আসতে চান, তাঁদের আমরা স্বাগত জানাই। অবশ্য ওবায়দুল কাদের সাহেব যেটা বলেন, সেটাই হবে। এটা ওনার সংসার। উনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটা আমরা মেনে নেব।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের কাদের মির্জা ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুছ, সহসভাপতি আবু নাছের ও জামাল উদ্দিন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আজিজুল হক, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আবদুল আজিজ, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের, চরফকিরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন, চরপার্বতী ইউপির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন কামরুল প্রমুখ।

গত ৩১ মার্চ নিজের ফেসবুকে কাদের মির্জা দলত্যাগের ঘোষণা দেন। অবশ্য তিনি দলের কোনো পর্যায়ে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি এর আগে কখনো নিশ্চিত করেননি। এরই মধ্যে আজ তিনি দলত্যাগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের ঘোষণা দিলেন।