দোষ স্বীকার করে, ক্ষমা চেয়ে বিদেশে যেতে হবে খালেদাকে: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
ফাইল ছবি।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে। আইন অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার আর কোনো পথ খোলা নেই।’

আজ বুধবার সংসদ অধিবেশনে ২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এমন মন্তব্য করেন। এ সময় আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার বাইরে আইনের অন্য কোনো বিধান দেখাতে পারলে আমি আইন পেশা ছেড়ে দেব।’

সংসদ অধিবেশনে বাজেটের ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও গণফোরামের সদস্যরা। এ সময় বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ ও মোশাররফ হোসেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি তোলেন। বিএনপির সাংসদেরা বাজেট আলোচনার সময়ও একই দাবি তুলেছিলেন। এ দাবির জবাব দেন আইনমন্ত্রী।

খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘উনার (খালেদা জিয়া) পরিবারের সদস্যরা দরখাস্ত করলেন। উনারা দরখাস্তে বলেছিলেন, উনাকে বিদেশ নিয়ে যেতে হবে। তাঁদের আবেদনে আইনের ধারার কথা উল্লেখ ছিল না। ওই আবেদন বিবেচনায় নিয়ে দুটো শর্ত দিয়ে তাঁর দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। শর্ত দুটো হচ্ছে, তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন ও দেশে থেকেই চিকিৎসা নেবেন। তারা (খালেদা জিয়ার পরিবার) এটা গ্রহণ করেছিল। তাঁকে কারাগার থেকে বাসায় নিয়ে গিয়েছিল।’

আনিসুল হক আরও বলেন, ‘বিএনপির নেতারা কথায় কথায় খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলেন। একটি আবেদন যখন নিষ্পত্তি হয়ে যায়, তখন সেটা কি আবার পুনর্বিবেচনা করা যায়? উনারা তো দরখাস্ত করে শর্ত মেনে মুক্ত করে এনেছেন। তারপর এখন বলছেন বিদেশে যেতে দিতে হবে। এটা কী রকম কথা! ওই দরখাস্ত তো নিষ্পত্তি হয়েই গেছে। সেটার ওপর তো আর কেউ কিছু করতে পারবে না।’

খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত বিধিবিধান উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্তি দিতে হলে, সেটা আইনের মাধ্যমেই করতে হবে। এ ক্ষেত্রে একটা উপায় আছে, তাঁরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন বা ৪০১ ধারায় সরকারের কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন। ক্ষমার আবেদন বিবেচনা করা হলে তবেই সেই আসামি বিদেশে যেতে পারবেন। আর ক্ষমা চাইতে গেলে অবশ্যই দোষ স্বীকার করে চাইতে হবে। এ ছাড়া সংসদে বক্তৃতা দিয়ে বা অন্য উপায় থাকলে, আপনারা আইনটা দেখান। আইনে থাকার পরও যদি আমরা বিবেচনা না করি, তখন বলতে পারবেন।’

আইন পেশা ছেড়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে আনিসুল হক বলেন, ‘আইনে ছয়টি সাব-সেকশন আছে। এর মধ্যে কোথাও যদি দেখাতে পারেন আবার দরখাস্ত করতে পারবেন, আবার পুনর্বিবেচনা করা যাবে, তাহলে আমি আইন পেশায় থাকব না।’