ধর্ষণ রোধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান সরকারের ভাঁওতাবাজি

বিএনপি নেতারা বলেছেন, ধর্ষণ রোধে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান করা সরকারের ভাঁওতাবাজি ছাড়া কিছুই না। বর্তমান সময়ে দেশজুড়ে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে। অপরাধীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকলে ধর্ষণ বন্ধ হবে না।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপির নেতারা এ সব কথা বলেন। ‘ধর্ষণ ও দুর্নীতির মহোৎসব-বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ?’ শীর্ষক ওই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এ দেশে ‘এক ব্যক্তি’ যা বলেন, সেটাই আইন। এ সরকারের কোনো জবাবদিহি না থাকায় দায়িত্ব পালনের কোনো বোধ নেই। সংবিধান বলতে কিছু নেই। এখন নতুন করে মৃত্যুদণ্ডের বিধান করা হয়েছে। এক ব্যক্তির কাছে বিচারক, প্রশাসন, পুলিশ জিম্মি। তিনি যা বলেন সেটাই আইন। কোথাও আইনের প্রয়োগ নেই।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ধর্ষণ রোধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান সরকারের ভাঁওতাবাজি, প্রতারণা ছাড়া কিছু নয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সাতটি ধারায় মৃত্যুদণ্ড আগেই ছিল। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত হওয়া জরুরি। এর বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই মামলা হয়ে যাবে। সমাজের রন্ধ্র-রন্ধ্র, জায়গা-জায়গা কলুষিত করছে এ সরকার। একটি দেশ এভাবে চলতে পারে না, এর পরিবর্তন অনিবার্য।

সভায় বক্তব্য রাখেন জিয়া পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক মো. এমতাজ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান চিকিৎসক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম ও অধ্যাপক লুৎফর রহমানসহ অনেকে।

সভায় বক্তারা বলেন, দেশে ধর্ষণ মহামারির আকার ধারণ করেছে। ধর্ষণ রোধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান কোনো সমাধান নয়। আইন সংস্কার করে ধর্ষণ রোধ করা যাবে না, দরকার আইনের প্রয়োগ। মৃত্যুদণ্ডের বিচার পেতে ভুক্তভোগীকে যদি দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় মৃত্যুর সময়ে পৌঁছে যেতে হয় তাহলে আর এমন বিধান করে লাভ কি? যারা ধর্ষণ করছে, তারা সংখ্যায় কম হলেও রাজনৈতিক পেশিশক্তিতে বলীয়ান। সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া তরুণীকে ছাত্রলীগের কর্মীদের ধর্ষণ করা সেটাই প্রমাণ করে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলারও ডাক দেন বক্তারা।