নির্বাচন না করায় প্রার্থীকে বহিষ্কার করল জাতীয় পার্টি

কুমিল্লা-৫ আসনের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) দলীয় মনোনয়ন নেওয়ার সময় মো. জসিম উদ্দিন কথা দিয়েছিলেন যেকোনো পরিস্থিতিতে শেষ দিন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকবেন। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। তার আগেই তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল হাশেম খান।

দলকে না জানিয়ে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে ক্ষুব্ধ হয়েছে জাতীয় পার্টি। আজ সোমবার তাঁকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের দলীয় গঠনতন্ত্রের ২০/১ (১)ক ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এই ব্যবস্থা নেন। একই সঙ্গে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জাতীয় পার্টি। জসিম উদ্দিন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ছিলেন।

জাপার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জাতীয় পার্টির সংসদীয় বোর্ড প্রার্থী মনোনয়নের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে দেওয়া প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে মো. জসিম উদ্দিনকে মনোনয়ন প্রদান করেছেন। জসিম উদ্দিন উক্ত মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তকে অমান্য করেছেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় তাঁর বিরুদ্ধে উপরোক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

কুমিল্লায় প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, মো. জসিম উদ্দিন রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল হাশেম খানও উপস্থিত ছিলেন। জসিম উদ্দিন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সেখানে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় আবুল হাশেম খান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন।

এ বিষয়ে গতকাল রোববার মো. জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘করোনার সময় এলাকার লোকজন আমাকে ধরেছেন নির্বাচন না করার জন্য। উনি মুরব্বি মানুষ, তাই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।’

জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, তাঁদের ধারণা, আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে জসিম উদ্দিন দলকে না জানিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কারণ, এর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় লক্ষ্মীপুর-২ আসনেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। তখন দলীয় প্রার্থী মোহাম্মদ নোমান টাকা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী শহিদ ইসলামকে (পাপুল) আসনটি ছেড়ে দেন। এ অভিযোগে পরে মোহাম্মদ নোমানকে দল থেকে বহিষ্কার করে জাতীয় পার্টি।

কুমিল্লা-৫ আসনের উপনির্বাচনেও এমন কিছু ঘটেছে কি না, জানতে আজ সোমবার জসিম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল হাশেম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে আর্থিক লেনদেনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। জসিম এলাকার ছোট ভাই। এলাকার লোকজন এবং আমাদের দলীয় লোকজনের অনুরোধে সে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে।’