বগুড়া জেলা আ.লীগের ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

সম্মেলনের সাড়ে ১১ মাসের মাথায় গতকাল ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ

সম্মেলনের সাড়ে ১১ মাসের মাথায় বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল সোমবার ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন। এতে ৩৯টি কার্যকরী পদের মধ্যে ৩টি ফাঁকা রাখা হয়েছে। ৩২ জনকে রাখা হয়েছে সদস্য পদে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে মজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক পদে রাগেবুল আহসানের নাম ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া টি জামান নিকেতাকে সহসভাপতি, মঞ্জুরুল আলম মোহন, সাগর কুমার রায় ও এ কে এম আসাদুর রহমানকে যুগ্ম সম্পাদক এবং প্রয়াত সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের ছেলে ও ব্যবসায়ী নেতা মাসুদুর রহমানকে অর্থ সম্পাদক করা হয়। পরে পূর্ণাঙ্গ কমিটির নাম প্রস্তাব নিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন। দুই নেতা তাঁদের পছন্দমতো আলাদা নাম প্রস্তাব দাখিল করেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে। সংকট নিরসনে কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল গঠন করা হয়।

ঘোষিত কমিটিতে মকবুল হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন, টি এম মুসা, আবদুল মতিন, আবুল কালাম আজাদ, মকবুল হোসেন, সাবেক মেয়র রেজাউল করিম ও আমানুল্লাহ এবারও সহসভাপতি পদ পেয়েছেন। সহসভাপতি পদে নতুন দুজনের মধ্যে প্রদীপ কুমার রায় আগে সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। মিজানুর রহমান বর্তমানে দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পেয়েছেন শাহরিয়ার আরিফ, জাকির হোসেন ও শাহাদৎ আলম। জাকির হোসেন আগের কমিটির দপ্তর সম্পাদক এবং শাহাদৎ আলম শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক ছিলেন।

আগের কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক তবিবর রহমান, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক মনসুর রহমান, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহ আখতারুজ্জামান, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আবদুল খালেক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান, বন ও পরিবেশ সম্পাদক শেরিন আনোয়ার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক শফিকুল আলম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক এস এম শাহজাহান, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম জহুরুল হক, শ্রম সম্পাদক এস এম রুহুল মোমিন একই পদে বহাল আছেন।

গত কমিটির কোষাধ্যক্ষ তপন চক্রবর্তী শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদকের পদ পেয়েছেন। আগের কমিটির উপদপ্তর সম্পাদক আল রাজি পেয়েছেন দপ্তর সম্পাদকের পদ। আগের কমিটির উপদপ্তর সম্পাদক মাশরাফি হিরো এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক আনিসুজ্জামান বহাল রয়েছেন। নাসরিন রহমান পেয়েছেন মহিলাবিষয়ক সম্পাদকের পদ। তিনি আগের কমিটিতে ছিলেন না।

সদস্য পদে নতুন যাঁরা

জেলা ছাত্রলীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক রুমানা আজিজ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহসভাপতি পদে থাকা ম. রাজ্জাক, শাহজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল ফারুক, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর হোসেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা তৌহিদুল করিম জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ পেয়েছেন।

নতুন সদস্য হয়েছেন অধ্যক্ষ সামস্-উল আলম, আলমগীর হোসেন, আশরাফুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, তৌফিকুর রহমান, রাহুল গাজী, ইমরান হোসেন, আহসানুল হক, জাহাঙ্গীর আলম আকন্দ, সাঈদ ফকির, ফারুক খান, জাহিদ হোসেন ও মাহবুবা নাসরিন।

বঞ্চিত যাঁরা

আগের কমিটিতে ১২ উপজেলা কমিটির সভাপতি জেলা কমিটিতে পদ পেয়েছিলেন। এবারও সদর, দুপচাঁচিয়া, কাহালু শিবগঞ্জ, সোনাতলা, ধুনটসহ বেশ কয়েকটি উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক জেলা কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। তবে বঞ্চিত ও বাদ পড়েছেন সদর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাফুজুল ইসলাম, বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খানসহ আরও কয়েকজন।

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমানের বক্তব্য জানতে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি। যুগ্ম সম্পাদক এ কে এম আসাদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জেলা কমিটিতে কোনো উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক থাকতে পারবেন না বলে দলীয় প্রধান নির্দেশনা দিয়েছেন। এরপরও ঘোষিত কমিটিতে কয়েকজনের নাম ভুলবশত এসেছে। দু-এক দিনের মধ্যে কমিটি আরেক দফা সংশোধন হতে পারে।